বিশিষ্ট ইসলামি আলোচক ও দাঈ শায়খ আহমাদুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তিন দিনের দাওয়াহ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে সারাদেশের প্রায় এক হাজার আবেদনকারী থেকে বাছাই করা ৮০ জন দাঈ অংশ নেন। বিশিষ্ট ইসলামি স্কলাররা তাদের প্রশিক্ষণ দেন।
রাজধানীর আফতাবনগরে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গত শনিবার (২৬ আগস্ট) প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে সোমবার (২৮ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে তা সম্পন্ন হয়।
দাওয়াহ প্রশিক্ষণ সম্পর্কে শায়খ আহমাদুল্লাহ রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে লিখেছেন- ‘যে আশা ও প্রত্যয় নিয়ে আমরা তিন দিন আগে দাওয়াহ প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু করেছিলাম, প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদপত্র ও দাওয়াহ সংশ্লিষ্ট বই তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আজ সন্ধ্যায় তার সফল সমাপ্তি ঘটল, আলহামদুলিল্লাহ।
সারাদেশ থেকে বাছাই করা তুমুল মেধাবী ও স্বকর্মে উজ্জ্বল ৮০ জন তরুণ দাঈর পদচারণায় গত তিন দিন মুখর ছিল আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন অফিস-প্রাঙ্গণ।
আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে দাঈগণ যেভাবে ছুটে এসেছিলেন, তাতে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন সম্মানিতবোধ করছে।
তিন দিনে প্রায় বিশটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে এবং প্রতিটি সেশনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞগণ প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন।
সেশন চলাকালে প্রশিক্ষণার্থীদের চোখমুখে উচ্ছ্বাসের যে ছটা আমরা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে, আমাদের প্রশিক্ষণ তাদেরকে দারুণভাবে আলোড়িত ও আলোকিত করেছে।’
কী কী বিষয়ে দাওয়াহ প্রশিক্ষণে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ লিখেছেন- মুসলিম ভূখণ্ডের ভূরাজনৈতিক ইতিহাস; ইফেক্টিভ দাওয়াহর পথ ও পদ্ধতি; পাবলিক স্পিকিং; মুসলিম মানসে সংশয় ও এর প্রতিকার; দীন প্রচারে মিডিয়া ও মাঠ: কিছু বিবেচনা; ধর্মত্যাগ ও পশ্চিমা সংস্কৃতির বিভ্রম; দাওয়াহ ও মনস্তত্ত্ব; দাঈর মিশন-ভিশন; ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷
শায়খ আহমাদুল্লাহ লিখেন- আমাদের এই কর্মশালার যারা ট্রেইনার ছিলেন, প্রত্যেকে আপন আপন জায়গায় দক্ষ, সফল এবং স্বনামে উদ্ভাসিত ব্যক্তিত্ব। পেশাগত জীবনের তুমুল ব্যস্ততা পরও তারা আমাদেরকে সময় দিয়েছেন, এই আন্তরিকতার পুরস্কার নিশ্চয় মহান আল্লাহর কাছে সংরক্ষিত থাকবে।
আমাদের এই দাওয়াহ প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্যপ্রশিক্ষিত দাঈ এবং প্রশিক্ষণ-নির্ভর দাওয়াহ প্লাটফরম গড়ে তোলা। দাঈদের প্রশিক্ষণ না থাকায় দাওয়াহর ময়দানে প্রায়ই অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা, বাগযুদ্ধ, বাগড়ম্বরতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণ মুসলমানকে বিভ্রান্ত করে আর বিশেষ একটি মহল এতে পেয়ে যায় ইসলামের ছিদ্রান্বেষণের সুযোগ।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দাওয়াহর ময়দানকে অবিতর্কিত, সুশৃঙ্খল, সুসংহত ও সুশোভিত করা আমাদের মূল লক্ষ্য।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বলেন, প্রতি বছর অন্তত ১০০ জন মেধাবী দাঈকে যদি আমরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারি, তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এদেশের দাওয়াহর ময়দানে বিরাট ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।