ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) স্মৃতি বিজড়িত ঝিনাইদহের আস-সুন্নাহ ট্রাস্টে পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশ, ঝিনাইদহ জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত দাওয়াহ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশের আমীর ও মুরশিদুল উম্মাহ সাইয়েদ মুহাম্মদ রাবে’ হাসানী নদভী (রহ.)-এর খলীফা ড. মাওলানা শহীদুল ইসলাম ফারুকী বলেছেন, “আমাদের সমাজের উচ্চশিক্ষিত ও এলিট শ্রেণির মাঝে চিন্তাগত ধর্মান্তর ও মানসিক ধর্মচ্যুতি তুফানের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভয়াবহ তুফান ঠেকাতে হলে দাওয়াতি চেতনায় উজ্জীবিত হতে হবে। উলামায়ে কেরামের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ — আকীদা রক্ষা করা।”
সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গলবার (২৭ মে) বাদ মাগরিব, আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট মিলনায়তনে। সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান শায়খ উসামা খোন্দকার এবং সঞ্চালনা করেন মাওলানা হেলাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুশাহিদ আলী চমকপুরী, দাওয়াহ পরিচালক, পয়ামে ইনসানিয়াত বাংলাদেশ এবং মুশরিফ, আস-সুন্নাহ ট্রাস্টের দাওয়াহ ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিভাগ।
সেমিনারে আলোচনা করেন— হাফেজ মাওলানা আশরাফুল ইসলাম (সভাপতি, হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন, ঝিনাইদহ), মাওলানা আশিকুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা বেলাল হুসাইন, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মুফতি নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।
ড. ফারুকী তার বক্তব্যে আরও বলেন, “পশ্চিমা ভোগবাদী সভ্যতা, ধর্মহীন মতবাদ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন আমাদের নতুন প্রজন্মকে আকীদাহচ্যুতি ও নাস্তিকতার দিকে ধাবিত করছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির নামে আমাদের সন্তানদের ঈমান কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল উপদেশ নয়, প্রয়োজন পরিকল্পিত দাওয়াহ আন্দোলন।”
তিনি দাওয়াতি ময়দানে উলামায়ে কেরামের সাহসী ও সংগঠিত ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, “ইসলাম আমাদের ‘আলেম’ ও ‘দাঈ’ বানিয়েছে—নিরব দর্শক নয়।”
সেমিনারের পূর্বে ড. ফারুকী আস-সুন্নাহ ট্রাস্টে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মুহাযারা (একাডেমিক বক্তৃতা) প্রদান করেন—
সকাল ১১টা–১টা: প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়ন: মুসলিম বিশ্বে পশ্চিমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন
বিকাল ৩টা–৫টা: মাকাসিদুশ শরীআহ: ইসলামী শরীআহর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
এই সেমিনারে ঝিনাইদহ জেলার আলেম, তালিবে ইলম ও বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের দাঈগণ অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “এ ধরনের চিন্তাশীল আয়োজন আমাদের দাওয়াতি দায়িত্বকে নতুন করে উপলব্ধি করিয়ে দেয়।”