পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ থাকবে না: চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, “অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পি.আর.) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না, জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে।” তিনি বলেন, “পি.আর. পদ্ধতি শুধু ভোটের কার্যকারিতা নিশ্চিত করে না, বরং ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ভেঙে সংলাপ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থার পথ তৈরি করে।”

শনিবার (২৬ জুলাই ২০২৫) সকাল ১১টায় খুলনার ঐতিহাসিক বাবরী চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পীর সাহেব বলেন, “১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছায়া এখনও দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। ৫ আগস্টের পর রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও আইনে কিছু সংস্কার শুরু হলেও রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও চরিত্রে এখনও পরিবর্তন আসেনি। রাজনৈতিক হানাহানি, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ও হত্যা—সবই চলমান রয়েছে।” তিনি মিডফোর্ট হাসপাতালের সামনে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই ধরনের বর্বরতা আর গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আলেম-ওলামা, সাধারণ মানুষ মিলে একটি ইসলামী ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের কাজ করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

বিএনপির প্রতি কড়া সতর্কবার্তা

বক্তব্যে তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা কর্মীদের অপরাধের দায় দল হিসেবে এড়িয়ে যেতে পারেন না। চাঁদাবাজরা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে জনতার কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। এ কারণে জনতার ক্ষোভ আপনাদের প্রতিও স্বাভাবিক। বরং সময় থাকতে দলের ভেতরের অপরাধীদের চিহ্নিত করুন।”

পীর সাহেব চরমোনাইয়ের ঘোষিত প্রার্থী তালিকা (খুলনা)

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা অঞ্চলের ছয়টি আসনের জন্য ‘হাতপাখা’ প্রতীকের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়:

খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা):
আলহাজ্ব মাওলানা আবু সাঈদ

খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা):
আলহাজ্ব মুফতি আমানুল্লাহ

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা):
হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল

খুলনা-৪ (রূপসা-দিঘলিয়া-তেরখাদা):
হাফেজ মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ

খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া):
আলহাজ্ব মুফতি আব্দুস সালাম

খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা):
হাফেজ আসাদুল্লাহ গালিব

বিশেষ অতিথিদের বক্তব্য
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন—

অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল:
“মাইলস্টোন স্কুলের দুর্ঘটনা জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার তাৎক্ষণিক উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”

অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ:
“চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক দস্যুতা জুলাই বিপ্লবের চেতনার পরিপন্থী। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার (জামায়াত):
রাজনৈতিক ঐক্যের আহ্বান জানান।

মুফতি মোস্তফা কামাল ও মাওলানা শুয়াইব হোসেন:
রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের ওপর জোর দেন।

অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান:
ইসলামি আদর্শে জনবান্ধব শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এবার ভোট চুরির নির্বাচন করলে প্লেনে উঠতে পারবেন না

নূর নিউজ

জামিনে মুক্তি পেলেন হেফাজত নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরী

নূর নিউজ

বিদ্যুৎ ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে শোধরানোর আল্টিমেটাম হাসানাত আমিনীর

আনসারুল হক