মুফতী মুহাম্মদ ইসমাঈল
প্রযুক্তির যে কাজগুলো আপনার ইবাদতে মনোযোগ নষ্ট করে, কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় রমাদানে তা বর্জন করা কাম্য। প্রযুক্তির ব্যবহার তো অবশ্যই দরকার। তবে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকুন। কারণ, মাত্রাতিরিক্ত প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়। রমাদানে কিভাবে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারে সংযমী হব, সে ব্যাপারে নিম্নে আলোকপাত করা হলো:
ফোন কল
সেসব ফোন কলের উপর মনোযোগ দিন যা আপনার জন্য জরুরি। কাউকে ফোন করার আগেই পরিকল্পনা করুন, এই কল থেকে আপনি কি কাজ সারতে চান, মূল পয়েন্ট থেকে বিচ্যুৎ হয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না। যখন ফোন ব্যবহার করবেন না, তখন মোবাইল ফোন/ ব্ল্যাকবেরি/ ট্যাবলেট বন্ধ রাখুন। কুরআন তিলাওয়াত বা জিকির করা ও মসজিদে যাওয়ার সময় এগুলোকে বন্ধ অথবা সাইলেন্ট করে রাখুন।
সাবস্ক্রিপশনের তালিকা ছোট করুন
সাবস্ক্রিপশনের তালিকা ছোট করুন। শুধুমাত্র উপকারী সাইটগুলোতে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত রাখুন যা রমাদানে আপনার ঈমান এবং কর্মদক্ষতাকে উজ্জীবিত করবে।
ইমেইলে ইনবক্সের উপর চাপ কমান
ইমেইলে ফিল্টার বা ফোল্ডার ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ই-মেইলগুলো আলাদা রাখুন। অপ্রয়োজনীয় নিউজলেটার বা বার্তা থেকে নিজের নাম সরিয়ে ফেলুন, যাতে আপনি আর তাদের ই-মেইল না পান।
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রামের ব্যবহার কমান
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যে অ্যাপগুলো আপনাকে রমাদানের বাইরে ব্যস্ত রাখতো রমাদানে সেগুলোর ব্যবহার সীমিত করুন।
প্রযুক্তি অপব্যবহারে সংযম অবলম্বনে প্রযুক্তি ব্যবহার করুন
ইন্টারনেটে প্রবেশ বন্ধ করে স্মার্ট ফোনে এমন সফটওয়্যার ব্যবহার করুন যাতে ইবাদত ও প্রয়োজনীয় কাজের প্রতি আপনার মনোযোগ নিবদ্ধ রাখতে পারেন। ইন্টারনেটের মনোযোগ ব্যাঘাতকারী বিষয় এড়িয়ে চলতে জবধফ ওঃ খধঃবৎ কিংবা এযড়ংঃবৎ এর মত অপশনগুলো চালু রাখুন।
জীবনের স্বল্প বিরতিগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার করে নষ্ট করবেন না
দৈনন্দিন জীবনে কর্মক্ষেত্রে যানবাহনে চলাচল, লিফটে ওঠানামা, লাইনে দাঁড়ানো ও ভ্রমণের সময়গুলোতে আপনার যে সময় ব্যয় হয়, তা টুইটারে টুইট করতে বা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিতে গিয়ে কাটাবেন না। এই সময়টা নীরব দুআ, যিকির ও অন্তত কিছু আধ্যাত্মিক গভীর চিন্তায় ব্যয় করুন।
মানুষকে অবহিত করুন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস বা ইনবক্সে মেসেজ দিয়ে রমাদানের মহিমা বিশিষ্ট আমল সম্পর্কে অন্যকে অবহিত করুন। এইভাবে আপনি রমাদান মাসের জন্য (অন্তত পক্ষে কিছুটা সময়) প্রযুক্তির ব্যবহারে সংযমী হতে পারেন।
লেখক : বিশিষ্ট দাঈ ও প্রিন্সিপাল, আন-নূর কালচারাল সেন্টার, নিউইয়র্ক