স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের যে জবাব দিলো টিআইবি

নূর নিউজ: ‘করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলা: কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার প্রতিবেদনের ওপর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবি গত মঙ্গলবার ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গবেষণায় করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ভ্যাকসিনসহ স্বাস্থ্য খাতে সুশাসনের ঘাটতির বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। গত শনিবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনকে আগাগোড়াই ভুল তথ্যসংবলিত বলে দাবি করেন। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে টিআইবি মনগড়া সমালোচনা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দিয়েছে টিআইবি। জবাবে টিআইবি বলেছে, এই গবেষণা সম্পন্ন করার জন্য টিআইবি সামাজিক বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং প্রতিটি তথ্যের সত্যতা একাধিক সূত্র থেকে যাচাই করেছে। করোনা টেষ্টিং ও আইসিইউ বেডশয্যা বৃদ্ধির বিষয়ে টিআইবির দেয়া প্রতিবেদনকে নাকচ করেছিলেন মন্ত্রী।

এর জবাবে টিআইবি বলেছে, জেলা-উপজেলা পর্যায়ের দরিদ্র মানুষের নমুনা পরীক্ষার সুযোগ খুব বেশি সম্প্রসারিত হয়নি এবং এখনো দেশের ৩৬টি জেলায় আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার না থাকায় প্রতিবেদন পেতে কোথাও কোথাও এখনো ৪ থেকে ৫ দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সরকারি আইসিইউ শয্যাগুলোর অধিকাংশ শহরকেন্দ্রিক বিশেষত ঢাকা শহরকেন্দ্রিক। কোভিড মোকাবিলায় একটি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের প্রতিটি জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ১০টি করে আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করা হলেও এক বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির অভিযোগ তোলা অনেকের কাছেই এখন একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। অথচ বেসরকারি হাসপাতালের টেস্টিং জালিয়াতি, একজন ড্রাইভার বা নিম্নপদস্থ কর্মচারীর দুর্নীতি বা বিচ্ছিন্ন কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে অস্বচ্ছতার খবর ছাড়া কেউ স্বাস্থ্য খাতের বড় কোনো দুর্নীতি দেখাতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে যারাই স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম করেছে, তাদেরই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়েছে।’

জবাবে টিআইবি বলেছে, দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট গুটিকয়েক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা বলতে কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের রদবদলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ভ্যাকসিন ক্রয় নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘টিআইবি ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন ক্রয় চুক্তিতে অস্বচ্ছতার কথা বলেছে, যা মোটেও সত্য নয়। ভারতের সঙ্গে চুক্তি থেকে শুরু করে সবকিছু ছিল স্বচ্ছ পানির মতো পরিষ্কার ও উন্মুক্ত। দেশের সব মানুষই জানে, ভারতের সঙ্গে কী কী ছিল চুক্তিতে এবং কেন ভারত চুক্তির অবশিষ্ট টিকা দিতে পারেনি।’ জবাবে টিআইবি বলেছে, ভ্যাকসিনের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসারে ক্রয় পরিকল্পনা ও ক্রয় চুক্তি সম্পাদন নোটিশ সিপিটিইউ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার কথা হলেও তা প্রকাশ করা হয়নি।

বসুন্ধরায় বন্ধ হওয়া হাসপাতাল প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘টিআইবি বসুন্ধরা আইসোলেশন সেন্টার প্রসঙ্গে, টিকার প্রায়োরিটি সেট করা বা বিদেশগামী যাত্রীদের সেবা দেওয়ার বিষয়ে যে সমালোচনা করেছে তা আগাগোড়াই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের জবাবে টিআইবি বলছে, প্রতিটি বিষয়েই গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, এবং গবেষণায় সেসব তথ্য যাচাইসাপেক্ষে উপস্থাপন করা হয়েছে প্রতিবেদনে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, স্বাস্থ্য খাত নিয়ে তারা (টিআইবি) কেবল সমালোচনা করার জন্যই সমালোচনা করেছে, কিন্তু করোনা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য তারা করেনি। কারণ, তারা করোনা নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রচারণা বা ভূমিকাই রাখেনি। এর উত্তরে টিআইবি বলছেন, করোনা কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ বিষয়ে ওই প্রতিবেদনে বিস্তারিত বিশ্লেষণসহ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

দেশের ৮ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ

নূর নিউজ

রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিববুল্লাকে গুলি করে হত্যা

নূর নিউজ

বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তায় কোন শঙ্কা নেই

নূর নিউজ