‘হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে কি একজন আলেমও জড়িত আছেন’

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন ১১৬ জন আলেমের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে জমা দিয়েছে।

এ তালিকা প্রকাশের পর আলেমদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এরইমধ্যে ইসলামী বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এর নিন্দা জানানো হয়েছে।

গণকমিশনের এ তালিকা নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি তথাকথিত গণকমিশন এটা গণধিকৃত একটি সংস্থা। এদের এই কাজের কোনও ভিত্তি নেই। এটা হচ্ছে নিছক ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ। আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরোধিতার কারণেই তারা এ ধরণের মনোভাব পোষণ করেছে। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে বিঘ্ন ঘটাবার জন্য ও মানুষকে ধর্ম বিমুখ করার জন্য এ ধরণের একটি চক্রান্তমূলক পদক্ষেপ তারা গ্রহণ করেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখান করেছে। তাদের এই তথাকথিত শ্বেতপ্রত্র প্রত্যাখান করেছে। জনগণের কাঠগড়ায় তাদেরকে দাঁড়াতে হবে।

গণকমিশনের ১১৬ আলেমের তালিকা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কুয়েত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইকোনমিক এসোসিয়েশনের কো-অর্ডিনেটর ড. মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন (মাহি)।

তিনি বলেন, গণকমিশন এটি কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়। এই নামটিও যথাযথ হয়নি। কারণ কমিশন হতে হবে গণমানুষের কমিশন। যেখানে বাংলাদেশের গণ মানুষ জড়িত থাকবে। এদের গণ সম্পৃক্ততা না থাকায় এটি যথাযথ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে নামটাও শুদ্ধ না, আর দ্বিতীয় হচ্ছে এটি সরকারের কোনও প্রতিষ্ঠান নয়। যে তালিকা করেছে আমি অধিকাংশ আলেম ওলামাকে চিনি ও ব্যক্তিগতভাবে জানি। যারা স্যোসাল মিডিয়ায় একটু সক্রিয়, যাদের সমাজে প্রভাব রয়েছে, যারা সুন্দর আলোচনা করতে পারেন, সমাজে পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন, মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেছেন এদেরকে তারা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এটা আমরা আশা করি না। তাদেরকে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযুক্ত করা এটা একটা অপবাদ বলা যায়। মানি লন্ডারিংয়ের অপবাদটি যে তারা দিল, এটা তো তাদের দায়িত্ব না। আইন অনুযায়ী কেউ কোনো ব্যক্তিকে সরাসরি অভিযুক্ত বলতে পারবে না। গণকমিশন যে কাজটি করেছে তারা তাদেরকে বলেছে তারা মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। তারা বলার কে? তাদের কি এটা বলার অধিকার আছে?

গ্লোবাল ফিলান্থ্রপিক প্লানেট (জিপিপি) ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহি বলেন, কিছু কিছু আলেম ওয়ায়েজিনদের সমস্যা থাকতে পারে। আমরা এটা বলছি না যে সমস্যা নেই। কিছু কিছু আলেমদের কথা বাতার্য় কোনো লিমিটেশন থাকে না। ওয়াজের ময়দান গরম রাখার জন্য বিভিন্নজন বিভিন্ন ধরণের কথা বলেন। আমি মনি করি তারা ইসলাম বিরোধী কাজ করেছে এবং বায়েস্ট হয়ে এ কাজটি করেছে। শুধু ইসলামকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এটা করা হয়েছে, যা তাদের একটি মিথ্যা প্রয়াস। এ ধরণের মিথ্যা প্রয়াস আমরা কখনও আশা করি না। আমি মনে করি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়া উচিত। আমরা চাই সরকার এই বিষয়ে ভালোভাবে দেখবেন।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলারসের সদস্য ড. মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন (মাহি) বলেন, এটা নিয়ে এত বেশি হতভম্ব হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কারণ গণকমিশন সরকার স্বীকৃত কোনও প্রতিষ্ঠান নয়। গণকমিশনকে বাংলাদেশের জনগণ স্বীকৃতি দেয় না। আমার মনে হয় না এটা নিয়ে টেনশনের প্রয়োজন আছে। দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, এদের মধ্যে কি একজন আলেমও জড়িত আছেন? এটা কি তারা দেখাতে পারবে? যারা এই বাংলাদেশ থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। তাহলে তাদের তালিকাটা কোথায়? প্রকৃত পক্ষে যারা মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে তাদের খোঁজে বের করা উচিত।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপে বয়ান করবেন যারা

Sufian Farabee

রমাদানে সাধারণত যে ১৫টি ভুল হয়ে থাকে

আনসারুল হক

দেশের সকল শিক্ষা কারিকূলামে বাইতুল মোকাদ্দাসকে পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভূক্তি দাবী

নূর নিউজ