স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া বিমানবন্দরের এক ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ৫০ এরও বেশি ইহুদি যাত্রীকে বিমানের ভেতর থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটে ভ্যালেন্সিয়া থেকে প্যারিসগামী Vueling Airlines-এর এক ফ্লাইটে। ইহুদি এই যাত্রীরা ফ্রান্সের অধিবাসী ছিল।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক্সপ্রেন নিউজ সূত্রে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, যাত্রীরা ক্রুদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে হিব্রু ভাষায় গান গাওয়া শুরু করলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তারা সবাই একটি ইহুদি সামার ক্যাম্প থেকে ফিরছিল। যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে, সঙ্গে ছিলেন ২১ বছর বয়সী এক ক্যাম্প পরিচালক।
বিমান ছাড়ার ঠিক আগে ক্যাম্পের শিক্ষার্থীরা হিব্রু ভাষায় গান গাইতে শুরু করলে কেবিন ক্রু ২ বার তাদের বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু তারা না থামায় পুলিশ ডেকে আনা হয় এবং পুরো দলকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ক্যাম্প পরিচালককে মাটিতে ফেলে হাত বেঁধে আটক করা হয়, যদিও পরবর্তীতে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কিছু যাত্রীর অভিযোগ, বিমানকর্মীরা ইসরায়েলকে ‘একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ অভিযোগ ভারতীয় গণমাধ্যম ও কিছু ইহুদি সংগঠন ধর্মীয় বৈষম্য হিসেবে তুলে ধরেছে।
তবে Vueling Airlines দাবি করেছে, এটি ধর্মীয় বৈষম্য নয়। যাত্রীরা বিমানে অতিরিক্ত শব্দ, জরুরি সরঞ্জাম ব্যবহারের চেষ্টা এবং বোর্ডিংকালে নিয়ম অমান্য করায় তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি অন্যান্য যাত্রীর নিরাপত্তা বিবেচনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বলে সংস্থাটি জানায়।
স্পেনের সিভিল গার্ডও জানিয়েছে, যাত্রীদের ধর্মীয় পরিচয় জানার কোনো প্রশ্নই ছিল না; সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল শুধুমাত্র নির্দেশনা অমান্য ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে।
এদিকে, স্পেনের ইহুদি সংগঠন Federation of Jewish Communities of Spain এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষের কাছে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা ও নথি প্রকাশের দাবি জানিয়েছে, যাতে বোঝা যায় আসলেই ধর্মীয় বৈষম্যের উদ্দেশ্য ছিল কি না।
রিপোর্ট অনুযায়ী, অধিকাংশ শিক্ষার্থী পরবর্তীতে আলাদা ফ্লাইটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। তবে এ ঘটনা স্পেন ও ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন তৈরি করেছে। ফ্রান্স সরকার ইতোমধ্যে দাবি করেছে, বিমান সংস্থাকে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে হবে।
সূত্র: এক্সপ্রেস নিউজ।