বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে (২৯ মে) বৃহস্পতিবার বাদ আছর দেশব্যাপী দাওয়াতী মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচির আওতায় রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় একযোগে দাওয়াতী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তরের দাওয়াতী মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ জাহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, “বর্তমানে সংস্কারের নামে গঠিত বিভিন্ন কমিশনে আলেম-উলামাদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। ইসলামী মূল্যবোধকে বিবেচনায় না নিয়ে যেসব সংস্কার চলছে, তা প্রকৃত পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ। সত্যিকারের সংস্কার চাইলে ইসলামী নীতিমালাকে ভিত্তি করেই তা করতে হবে।”
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, “আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর খলিফা হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। এই খেলাফতের দায়িত্ব হলো আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করা। কীভাবে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হয়, বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে সাম্য ও শান্তি আনতে হয়—তা পবিত্র কুরআন ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ২৩ বছরের সুন্নাহ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। তাই প্রকৃত শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন কায়েম করা। মানবতার মুক্তির জন্য ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থাই একমাত্র সমাধান।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট— আমরা কুরআনী শাসন চাই, আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে ইসলামী বিধানের বাস্তবায়ন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক উৎসব হিসেবে নয়, বরং প্রতিজ্ঞার দিন হিসেবে পালন করি। আজকের দিনে আমরা জাতির সামনে অঙ্গীকার করছি— অতীতের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ ইসলাম, দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাব।”
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৯ মে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে আল্লামা মামুনুল হকের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহর আদর্শ এবং দেওবন্দী চেতনার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নেতৃত্ব গঠন ও তৃণমূলভিত্তিক সাংগঠনিক কাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।
১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজকের কর্মসূচিতে অংশ নেয় সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ঢাকা জেলা উত্তর ও দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর জেলা ও মহানগর, নরসিংদী, ময়মনসিংহ (উত্তর ও দক্ষিণ), টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, গাইবান্ধা, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, শেরপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, বগুড়া, নোয়াখালী, মানিকগঞ্জ, দোহার, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, শিবচর, মাধবপুর ও জগন্নাথপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় দাওয়াতী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।