ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বগুড়া এক গণসমাবেশে বলেছেন, গত জুলাই-আগষ্টসহ বিগত পনের বছরে আওয়ামী লীগের অপরাধের ব্যাপকতা ও মাত্রা এতো বেশি যে, আওয়ামী লীগকে আর রাজনৈতিক দল বলা যায় না। এটা বরং ভয়ংকর অপরাধীদের একটি অপরাধচক্র। তাই এদেরকে রাজনীতি করতে দেয়ার কোন সুযোগ নাই। এদেরকে রাজনীতি করতে দেয়ার মানে একটি ভয়ংকর অপরাধীচক্রকে আবারো নির্মমতা চালানোর সুযোগ করে দেয়া।
ইসলাম বিরোধী নারী নীতিমালা বাতিল, শাপলা ও জুলাই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, দূর্নীতিবাজদের বিচার এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা, ইসলামী হুকুমত কায়েমের লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বগুড়া জেলা শাখার উদ্দে্যাগে ঐতিহাসিক সাতমাথার মুক্ত মঞ্চে মাওলানা আ. ন. ম মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অদ্য ০৯ মে শুক্রবার এক বিশাল গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর, মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব কুরআন-হাদীস ও এদেশের মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
নারী কমিশনের প্রস্তাবনায় যৌনকর্মে নিষ্পেষিত নারীদের রক্ষার বদলে তার ওপরে চলা নির্মমতাকে শ্রম আখ্যা দিয়ে নারীকে এক বিভৎস চক্রে আটকে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। নারীর সাথে এই ধরণের নির্মমতার প্রস্তাব যে কমিশন করে তাদের কমিশন বাতিল করতেই হবে।
তিনি আরো বলেন, মায়ানমারকে মানবিক করিডোরের প্রস্তাব আমাদেরকে সন্দিহান করে তুলেছে। কারণ এই জাতিসংঘ ১৩ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমানকে মায়ানমারকে ফেরত পাঠানোর জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফিলিস্তিনে ইসরাইল যে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা চালাচ্ছে জাতিসংঘ কাগুজে বিবৃতি ছাড়া ইসরাইলকে বিরত রাখার জন্য কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। মোদি সরকার ভারতে মুসলমান, মাদ্রাসা এবং মসজিদের উপর যে চরম নির্যাতন ও ধ্বংসলিলা চালাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায় সম্পূর্ণভাবে নিরবতা পালন করছে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন,সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই জরুরী তবে মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অর্থবহ কোন কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারবে না।
গণ সমাবেশ বিশেষ অতিথি দলের নায়েবে আমীর— আল্লামা আব্দুল হক আজাদ বলেন, নারী নীতিমালায় নারী ও পুরুষকে সাংঘর্ষিক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে নারী ও পুরুষের সম্পর্ক পারস্পরিক পরিপূরক। তিনি আরো বলেন অতীতের সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। কেননা শাসকদের অন্তরে আল্লাহর ভয় ছিলো না এবং ক্ষমতাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিলো। যে সরকার ক্ষমতায় আসে দেশের সমস্ত টার্মিনাল তাদের দখলে নিয়ে চাঁদাবাজি করে। পরবর্তী সরকার আসলে ঐ টার্মিনাল তাদের দখলে যায়। অবাধে রাষ্ট্রিয় সম্পদ আত্মসাৎ করে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করে। সুতরাং ইসলামী আন্দোলনের মূল বক্তব্য ইসলামী আইন চাই, খোদা ভীরু লোকের শাসন চাই। এর বিপরীতে বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে কেয়ামত পর্যন্ত মানুষ এবং দেশের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না।
সভাপতি তার বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের সমস্ত নেতা কর্মীদের ইসলামের আদর্শ প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়ার আহবান জানান।
উক্ত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের বগুড়া জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা সহ-সভাপতি,প্রভাষক মীর মাহমুদুর রহমান (চুন্নু) জেলা সেক্রেটারী সহ: অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম শফিক, জতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মাওলানা আলতাব আলী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহা. ফরহাদ হোসেন মন্টু, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি, মুহা. সোহরাব হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক মুহা. সোহেল রানা প্রমুখ।