ইতিকাফের বিধি-বিধান

মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ: এক মহল্লায় একাধিক মসজিদ থাকলে প্রতিটি মসজিদে ইতিকাফ করা উত্তম। তবে তা জরুরি নয়। বরং যেকোনো মসজিদে ইতিকাফ করলে মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে যথেষ্ট। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৪২, ২/৪৫, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৭/১৬৯)

► ইতিকাফ স্বেচ্ছায় পালন করতে হবে। শরিয়তে বিনিময় দিয়ে ভাড়া করে ইবাদত পালন করার সুযোগ নেই। তাই কাউকে টাকার বিনিময়ে ইতিকাফ করা এবং করানো সম্পূর্ণ নাজায়েজ। এভাবে ইতিকাফ করানোর দ্বারা মহল্লাবাসী দায়মুক্ত হতে পারবে না। (রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৫, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৭/১৭১)

► মসজিদ থেকে বের হওয়া ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদের আদবের খিলাফ কোনো কাজ করা বা মুসল্লিদের ও ফেরেশতাদের কষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করার অনুমতি নেই। তাই নির্ভরযোগ্য বর্ণনা অনুযায়ী মুতাকিফ ব্যক্তি বায়ু নির্গমনের জন্য মসজিদ থেকে বের হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ৫/৩৬১, ইমদাদুল ফাতাওয়া : ২/১৫২)

► শেষ দশকের সুন্নত ইতিকাফকারীর জন্য মানবীয় ও শরয়ী বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। সুতরাং ফরজ গোসল ছাড়া গরম ও গায়ের দুর্গন্ধের কারণে গোসল করার জন্য বের হওয়া জায়েজ নেই। হ্যাঁ, যদি অতীব প্রয়োজন হয় এবং মসজিদে গোসলের সুব্যবস্থা থাকে, তাহলে মসজিদেই গোসল করবে অথবা ভেজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে ফেলবে। আর ইস্তিঞ্জা করতে গিয়ে অজু পরিমাণ স্বল্প সময়ের মধ্যে সাবান ইত্যাদি ছাড়া স্বাভাবিক গোসল করতেও কোনো অসুবিধা নেই। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪৪০, ২/৪৪৫, আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৫)

► এই ইতিকাফের শেষ সময় হলো ঈদের চাঁদ ওঠার দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তাই ২৯ রমজান বা ৩০ রমজান সূর্যাস্তের আগে যদি চাঁদ দেখা যায়, তবু সূর্য ডুবে যাওয়ার আগে মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর মসজিদ থেকে বের হতে পারবে। (ফাতাওয়া শামি : ২/১৩৭)

► প্রাকৃতিক ও শরিয়ত সমর্থিত প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হয়ে যদি প্রয়োজন শেষে আধামিনিটও দেরি করা হয়, তাহলে এতেও ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। (তহতবি : ৫৮৫; হিন্দিয়া : ১/২১২)

► বাথরুম যদি মসজিদের অনেক দূরে থাকে, তাহলে প্রস্রাব-পায়খানার জন্য সেখানে যাওয়াও বৈধ। (ফাতাওয়া শামি : ২/১৩২)

► ফরজ গোসল ছাড়া অন্য যেকোনো গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়া শামি : ২/১৩২)

► এ ক্ষেত্রে বড় পাত্রের ব্যবস্থা করে মসজিদের ভেতর এমনভাবে গোসল করা যায়, যাতে গোসলের পানি মসজিদে না পড়ে কিংবা কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে নেবে। জানাজা, রোগীর সেবা ইত্যাদির জন্য মসজিদ থেকে বের হলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়া শামি : ২/২১৩)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

কাজের লোকদের সঙ্গে আপনার আচরণ যেমন হবে

নূর নিউজ

১ সেপ্টেম্বর থেকে দারুল উলুম দেওবন্দের ক্লাস শুরুর ঘোষণা

নূর নিউজ

কুরবানির নিয়তে পালিত পশুর দুধ দোহন করা যাবে কি?

নূর নিউজ