ইসলামী মূল্যবোধকে সামনে রেখে নির্বাচনে রিকশা প্রতীকে তিন শতাধিক প্রার্থী প্রস্তুত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬-এ অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। দলটি জানায়, ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে ৩০০ আসনেই রিকশা প্রতীকে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে দলটির।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (IDEB) মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন দলের আমীর মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক। ব্রিফিং সঞ্চালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

উপস্থিত ছিলেন দলের অভিভাবক পরিষদের সদস্য মাওলানা আকরাম আলী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা আলী উসমান, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, মাওলানা শরিফ সাইদুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ এবং তার পূর্বে জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। বিগত ১৫ বছরে যারা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অন্যতম। আমাদের প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কারাবরণ করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী শাসন আমাদের সংগঠনকে টার্গেট করেছিল।”

তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য রক্ষা করতে হবে। কেউ যদি পুনরায় দমন-পীড়নের রাজনীতিতে ফিরে যায়, তাহলে খেলাফত মজলিস জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবে এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।”

বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ পরিচালিত হবে বাংলাদেশের মানুষের সিদ্ধান্তে। কোনো বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ আর দেওয়া হবে না।”

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ইসলাম ও দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্বাচনী পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে ৩০০ আসনে নির্বাচন করব। তবে বৃহত্তর ইসলামী জোট বা নির্বাচনী সমঝোতা যদি দেশের স্বার্থে বেশি কার্যকর হয়, সেটিও বিবেচনায় থাকবে।”

বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনী কাঠামোর অসম্পূর্ণ বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে হবে। সংসদের দ্বিকক্ষীয় কাঠামো নিয়ে ঐকমত্য থাকলেও— উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ কিভাবে গঠিত হবে, তা এখনও নির্ধারিত নয়।”

পিআর (PR) সিস্টেম বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা আংশিক পিআর সিস্টেম চাই। সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটাতে আংশিক পিআর সিস্টেম নিম্নকক্ষে ও পূর্ণ পিআর সিস্টেম উচ্চকক্ষে প্রবর্তন করা জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “দেশে একটি গঠনমূলক ও শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা প্রয়োজন। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না ইনশাআল্লাহ।”

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “খেলাফত মজলিস ঐতিহ্যগতভাবে ইসলামী ঐক্যকামী দল। দলটি প্রতিষ্ঠার পরপরই বৃহত্তর ইসলামী জোট গঠন করেছিল। আজও সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে চলছে।”

স্থানীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “স্থানীয় নির্বাচনও জাতীয় রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।”

এর আগে সকাল ১০টা থেকে IDEB মিলনায়তনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচিতি ও ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারাদেশ থেকে রিকশা প্রতীকে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক প্রায় তিন শতাধিক প্রার্থী অংশ নেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদেরকে নির্বাচন, রাজনীতি ও দলীয় আদর্শ বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

দ্রব্যমূল্যের উধ্বর্গতিতে মানুষের ধৈয্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে

নূর নিউজ

নিঃশব্দে ভালোবাসা যায় না : ভা লো বা স লে শ ব্দ হ য়

নূর নিউজ

নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

নূর নিউজ