কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য ও লবণ সরবরাহ সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সরকারের প্রতি ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের অর্ধশতাধিক কওমি মাদরাসার মুহতামিম ও উলামায়ে কেরাম।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক জরুরি আলোচনা সভায় তারা এই আহ্বান জানান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির ও জামিয়া নূরিয়ার মহাপরিচালক মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী।
তিনি বলেন, “চামড়া শিল্প আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। অথচ কোরবানির পশুর চামড়ার বর্তমান নির্ধারিত মূল্য (শহরে প্রতি বর্গফুট ৬৫ টাকা, গ্রামে ৬০ টাকা) অযৌক্তিক এবং বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ১৫-২০ বছর আগেও চামড়ার যে দাম ছিল, এখনকার নির্ধারিত দাম তার অর্ধেকও নয়। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম বেড়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই মূল্য নির্ধারণে প্রকৃত হকদার গরিব-এতিমরা এবং কওমি মাদরাসাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিগত সরকার যেভাবে পাট শিল্প ধ্বংস করেছে, এখন চামড়া শিল্পেও একই ষড়যন্ত্র চলছে।”
সভায় উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা বলেন, “মাদ্রাসায় লবণ সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দ্বারা চামড়ায় লবণ লাগানো সম্ভব নয়। মাদরাসায় চামড়া সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নেই, নেই গোডাউন। এতে পরিবেশ দূষণ এবং আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।”
তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান—চামড়ার দাম পুনঃনির্ধারণ করে নতুন ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করা হোক এবং লবণ সরবরাহ আরৎদার ও সংশ্লিষ্ট ট্যানারি মালিকদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হোক।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
বক্তাদের মধ্যে আরও ছিলেন মুফতি ইলিয়াস মাদারীপুরী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, মুফতি হাবিবুর রহমান, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মুফতি কামরুজ্জামান রহমানী ও মুফতি ফখরুল ইসলাম।