আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২৪ দফা অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রম সম্বলিত রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ, রাজনৈতিক দল ও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। ঘোষণায় জানানো হয়, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচন উপলক্ষে ঘোষিত ২৪টি বিষয় মোট ২০৭ ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রতিটি ধাপের নির্দিষ্ট সময়সীমা রোডম্যাপে উল্লেখ রয়েছে। তবে ভোটগ্রহণ বা তফসিলের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
সংলাপ ও অংশীজন
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেড় মাসব্যাপী আট শ্রেণির অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, নারী নেতৃত্ব ও সাংবাদিকরা।
ভোটার তালিকা
দ্বিতীয় ধাপের সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এটি চূড়ান্ত হবে ৩১ আগস্ট। খসড়া প্রকাশ করা হবে ১ নভেম্বর, আর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ নভেম্বর।
আইন-বিধি সংস্কার
৩১ আগস্টের মধ্যে নির্বাচনি আইনবিধি সংশোধনের প্রস্তাব ও প্রণয়ন সম্পন্ন করা হবে। সংসদীয় আসনের সীমানা আইন, ভোটার তালিকা আইন, নির্বাচনি বিধিমালা, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক নীতিমালা, নির্বাচন পরিচালনা আইন (সংশোধন) ২০২৫, নির্বাচন কর্মকর্তা আইন ১৯৯১ ও ইসি সচিবালয় আইন ২০০৯–এসব সংশোধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাজনৈতিক দল নিবন্ধন
৩১ আগস্টের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করবে ইসি।
আসন সীমানা নির্ধারণ
১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করা হবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জিআইএস ম্যাপও প্রকাশ করবে ইসি।
পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক
২২ অক্টোবরের মধ্যে দেশীয় পর্যবেক্ষক নিবন্ধন চূড়ান্ত এবং ১৫ নভেম্বর নিবন্ধন সনদ প্রদান করা হবে। একই সময়সীমার মধ্যে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমতি প্রদানের কার্যক্রম শেষ হবে।
অন্যান্য কার্যক্রম
-
নির্বাচনি ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা, পোস্টার মুদ্রণ শেষ হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
-
নির্বাচনি প্রশিক্ষণ শুরু হবে ২৯ আগস্ট এবং ভোটগ্রহণের পাঁচ দিন আগে শেষ হবে।
-
নির্বাচনি দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও বিতরণ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে।
-
স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ৩০ নভেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।
-
১৫ নভেম্বর নির্বাচনি বাজেট চূড়ান্ত হবে।
-
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অর্থ বরাদ্দ বৈঠক হবে ১৬–২০ নভেম্বর।
-
৩০ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জনবল ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে।
-
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরি হবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
-
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম সভা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
-
৩১ অক্টোবরের মধ্যে আইসিটি-সংক্রান্ত কাজ শেষ করা হবে।
-
৩০ নভেম্বরের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচার সম্পন্ন হবে।
-
ফলাফল প্রচার, বেসরকারি ফলাফল প্রদর্শন ও প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালট কার্যক্রম ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে শেষ করা হবে।
রোডম্যাপ দেখতে ক্লিক করুন