যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত ভারতীয় পণ্যে বাড়তি কর আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এ নীতিতে নির্দিষ্ট পণ্যের শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হবে। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অরগানাইজেশনের (FIEO) হিসেবে, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রফতানি ব্যবসায় প্রায় ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাব পড়তে পারে। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো দেশ, যাদের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র কম শুল্ক ধার্য করেছে।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের তুলনায় অনেক বেশি পণ্য আমদানি করেছে, যার ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৫৮ কোটি মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন শুল্কনীতি এই ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করবে। যদিও ২৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে, তবুও বিনিয়োগ বিশ্লেষক সন্তোষ মিনার ভাষায়, এটি ট্রাম্পের একটি ‘আগ্রাসী কৌশল’।
সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে যেসব খাতে
সামুদ্রিক মাছ (সিফুড): ভারতের রফতানিকৃত সামুদ্রিক মাছের ৪০% যায় যুক্তরাষ্ট্রে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০ হাজার কোটি রুপি। চিংড়ি সবচেয়ে বড় পণ্য। শুল্ক বৃদ্ধিতে মৎস্যজীবী ও কৃষকদের জীবিকায়ও প্রভাব পড়বে।
কাপড়: নয়ডা, সুরত ও তিরুপ্পুরের রফতানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাঠানোর জন্য কাপড় উৎপাদন আপাতত বন্ধ রেখেছে। পুরনো অর্ডার ক্ষতির মুখে পড়বে, আর নতুন অর্ডার আসা বন্ধ হতে পারে।
জহরত ও গয়না: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমেরিকায় ৮৩ হাজার কোটি রুপির জহরত ও পাথর বসানো গয়না রফতানি করেছে ভারত। নতুন শুল্কের কারণে বিকল্প বাজার হিসেবে দুবাই ও মেক্সিকোর দিকে নজর দিচ্ছে রফতানিকারকরা।
গাড়ির যন্ত্রাংশ: রফতানিকৃত মোট যন্ত্রাংশের অর্ধেকই যায় যুক্তরাষ্ট্রে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬১ হাজার কোটি রুপি। নতুন শুল্কে এই ব্যবসার বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এসব খাতে রফতানি কমে গেলে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে এবং এর প্রভাব ভারতের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও পড়বে।