দুই শিক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনায় সাধারণ আলেম সমাজের নিন্দা ও প্রতিবাদ

আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশের দু’জন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎসকে সম্প্রতি প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির শিকার হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকা চৌধুরী—যে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সাফওয়ান চৌধুরী রেবিল, বর্তমানে সে ট্রান্স-জঙ্গি ও এলজিবিটিকিউ একটিভিস্ট সাহারা চৌধুরী নামে পরিচিত—দু’জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের ছবি অঙ্কন করে লিখেছে, এই পাবলিক ফিগারদের হত্যা করুন, যারা মানবাধিকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। কোনো মতবিরোধ কিংবা ভিন্নমতের কারণে কাউকে হত্যা বা সহিংসতার হুমকি দেওয়া ইসলাম, নৈতিকতা ও আইনের পরিপন্থী। সাধারণ আলেম সমাজ উভয় শিক্ষকের পাশে রয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোরদাবি জানাচ্ছি।

আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডারবাদ ইসলামি শরিয়ত, নৈতিক মূল্যবোধ এবং দণ্ডবিধি ৩৭৭ ধারায় অপরাধ এবং বিকৃত আচরণ। ইতিপূর্বেএই বিষয়ে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ অথরিটির অধীনে জাতীয় মুফতি বোর্ড বর্তমান বাইতুল মোকাররমের খতিবের স্বাক্ষরিত ফতোয়া প্রকাশ করেছে। এমনকি এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ ও নাগরিক সমাজের মতামত এবং সামাজিক অবস্থানও সুস্পষ্ট। কাজেই এ ধরনের অনৈতিক প্রবণতার বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও একাডেমিক ডিসকোর্স করা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই কারণে যেসব শিক্ষক প্রকাশ্যে এলবিজিটিকিউ-এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, তারা ধর্মীয় ও সমাজের নৈতিক মূল্যবোধ রক্ষার দায়িত্বই পালন করছেন।

কিন্তু দুঃখজনক হলো, হত্যার হুমকির ঘটনায় জোনায়েদ সাকি, আনু মুহাম্মদ ও সামিনা লুৎফাসহ বামধারার রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও নাগরিক সমাজের ১৬২ জন উল্টো হুমকিদাতার পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এটি দ্বিচারিতা ও নৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ। আইনবিরোধী ও সমাজবিধ্বংসী কাজের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা প্রকৃত অর্থে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। বাংলাদেশে তথাকথিত সেক্যুলার, প্রগতিশীল ও বামপন্থী মহলে বছরের পর বছর ধরে যে জনবিরোধী, বিকৃতি ও চরমপন্থা লালন করেন, এ ঘটনা তারই ফলাফল।

সাধারণ আলেম সমাজ সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎস ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন, গ্রেফতার, জেল-জুলুম ও প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। এখন তাদেরকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়ার কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও এর কোনো আইনি প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বরঞ্চ তাদের হত্যাযোগ্য করে তোলার পেছনে বিপ্লবী যুব আন্দোলন ও ছাত্র ইউনিয়নের মতো বাম সংগঠনগুলো একাডেমিক গ্রাউন্ড তৈরি করে যাচ্ছে।

আমরা, সাধারণ আলেম সমাজ রাষ্ট্র ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এই ধরনের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। আশা করি, সরকার এই গুরুতর হুমকির বিষয়ে কোনো রকম শৈথিল্য প্রদর্শন না করে দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সামাজিক শান্তি রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবেন।

সাধারণ আলেম সমাজ সর্বদা সত্য, ন্যায় ও নৈতিকতার পক্ষে। সমকামিতা-ট্রান্সজেন্ডারবাদবিরোধী অবস্থানকে আমরা ধর্মীয় ওসামাজিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করি। একই সাথে এ ধরনের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকিকে আমরা ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করি।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

মাওলানা আব্দুল হক জালালাবাদী রহ. ইন্তেকালে আল্লামা রাব্বানীর শোক

নূর নিউজ

শ্রীপুরে কবর জিয়ারত না করায় ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে চাকরিচ্যুত

আনসারুল হক

বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ডের ‘সড়কপথ হচ্ছে’

নূর নিউজ