রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া গান্নারপাড় এলাকার মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু জিসান আহমেদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩০ মে) সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশু জিসানকে মাদ্রাসা থেকে ডেকে নিয়ে সোহেল হত্যা করে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, শিশু জিসান (৮) গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের গান্নারপাড় এলাকার মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদিকুল ইসলাম এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার এশার নামাজের সময় তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলে মাদ্রাসার শিক্ষক রেজাউল বিষয়টি পরিবারকে জানায়। সেখানেও খুঁজে পাওয়া না গেলে মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থীদের ডেকে জিজ্ঞেস করতেই রব্বানী নামে এক শিক্ষার্থী জানান, মাগরিবের নামাজের সময় একজন এসে জিসানকে ডেকে নিয়ে গেছে। পরে রব্বানীর মুখের বর্ণনা অনুযায়ী পরিবারের লোকজন নিশ্চিত হয় তার নাম সোহেল ও তার বাড়ি তুষভাণ্ডার।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন জিসানের নানাবাড়ি ছিল্লানীর মাজার উত্তরপাড়ায় কাজ করতেন তুষভাণ্ডারের সোহেল।
আর জিসানের জন্মের পর বাবা বিদেশে অবস্থান করায় মা জাহেদা বাবার বাড়িতেই থাকেন। এখানেই জিসানের বেড়ে ওঠা।
এরপর রাত ১২টায় শিক্ষার্থী রব্বানীকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষক রেজাউল পৌঁছায় তুষভাণ্ডার সোহেলের বাড়িতে। সোহেলকে তার বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় জিসানের কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে অস্বীকার করে।
পরে সুকৌশলে শিক্ষক রেজাউল ৯৯৯ এ ফোন করলে গঙ্গাচড়া থানা পুলিশ তুষভাণ্ডারে সোহেলের বাড়িতে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাকে কালিগঞ্জ থানায় নিয়ে এসে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জিসান হত্যার কথা স্বীকার করে ঘাতক সোহেল।
শুক্রবার ভোর ছয়টার সময় পুলিশ ঘাতক সোহেলকে নিয়ে তুষভাণ্ডার থেকে ঘটনাস্থল গঙ্গাচড়ার লক্ষীটারীতে পৌঁছায়। পরে লক্ষীটারী ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের পুরাতন ক্যানেলের পাশের পাটখেত থেকে উদ্ধার করা হয় শিশু জিসানের লাশ।
জিসানের নানা আজম আলী জানান, মৃত্যু যার যেভাবে আছে কপালে সেভাবেই হবে। কিন্তু বাচ্চাটাকে মাদ্রাসা থেকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলল। হত্যাকারীদের বিচার চাই।
গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান দুলু বলেন, এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘাতকদের বিচার চাই।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল ইমরান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকেও গ্রেপ্তার করেছি। তদন্ত চলমান আছে।