যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ইরান ও ইসরায়েল পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে এই দাবি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরানের এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব পাননি এবং তাদের কাছে এমন কোনো প্রস্তাবের প্রয়োজনও নেই।
তিনি বলেন, “ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য আমাদের কাছে প্রতারণার অংশমাত্র। এসবের মাধ্যমে তারা ইরানে হামলার বৈধতা তৈরি করতে চায়। বাস্তবে শত্রুপক্ষ এখনো ইরানের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের প্রতিশোধমূলক হামলা আরও জোরদার করার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। মিথ্যা প্রচারণায় কান দেওয়ার সময় আমাদের নেই।”
যদিও ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং এটি চলমান সংঘাত নিরসনের পথ তৈরি করবে, দুই দেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের বেশ কিছু পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জবাবে, ইরান কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এদিকে, মার্কিন প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে সিএনএন জানিয়েছে, পাল্টাপাল্টি হামলার মাঝেও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইরানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। শনিবার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পরও এই কূটনৈতিক সংযোগ অব্যাহত রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন চায়, পরিস্থিতি অবনতির আগেই একটি কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে।
ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েল ও ইরান ১২ ঘণ্টার জন্য সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যেই কার্যকর হবে। উভয় পক্ষ একে অপরের প্রতি শান্তিপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল আচরণ করবে। এই যুদ্ধ যদি চলত, তাহলে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিতে পারত। কিন্তু তা হয়নি, এবং হবেও না।”
তিনি আরও বলেন, “ঈশ্বর ইসরায়েলকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর ইরানকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর মধ্যপ্রাচ্যকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর যুক্তরাষ্ট্রকে আশীর্বাদ করুন এবং ঈশ্বর বিশ্বকে আশীর্বাদ করুন।”
তবে বাস্তবতা হলো, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ও আশাবাদের মাঝেও যুদ্ধ এখনো থামেনি। বরং পরস্পরের ওপর চাপ ও হামলা অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন সময়ই বলে দেবে।