গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হলো মতের ভিন্নতা। একটি বহুমাত্রিক রাজনৈতিক সমাজে মত-পথের পার্থক্য থাকবে, বিরোধিতা হবে, সমালোচনা এবং পর্যালোচনাও চলবে—এটাই স্বাভাবিক। বরং এগুলোই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাণবন্ত ও গতিশীল রাখে। তবে এ ভিন্নমত বা সমালোচনারও একটি শালীনতা, একটি সভ্যতা থাকা প্রয়োজন। কারণ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেমন অধিকার, তেমনি অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনও একটি নৈতিক দায়।
দুঃখজনকভাবে, সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে মতবিরোধ বা সমালোচনার জায়গায় ব্যক্তিগত আক্রমণ, কুরুচিপূর্ণ ভাষা এবং অশালীন মন্তব্যের প্রবণতা বাড়ছে। এই ধরনের আচরণ শুধু রাজনীতিকে কলুষিত করে না, বরং সমাজে তিক্ততা ও বিভাজনের দেয়ালও উঁচু করে তোলে। গণতন্ত্রের নামে কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি, কুরুচিকর বাক্য বিনিময় কখনোই একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিফলন হতে পারে না।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ—আপনারা একে অপরের ভুল-ত্রুটি তুলে ধরুন, তর্ক-বিতর্ক করুন, কিন্তু তা হোক তথ্যনির্ভর ও যুক্তিসঙ্গত ভাষায়। ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, হোক যুক্তির প্রতিযোগিতা। রাজনৈতিক মতবিরোধ যেন রাজনৈতিক শত্রুতায় পরিণত না হয়। কারণ, শত্রুতা মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে, আর মতবিরোধ মানুষকে ভাবতে শেখায়।
দেশের রাজনীতিকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক, জনমুখী ও দায়িত্বশীল করতে চাই, তাহলে রাজনীতির ভাষা ও আচরণেও আমাদের শালীনতার পরিচয় দিতে হবে। মতের ভিন্নতা থাকুক, কিন্তু মানবিকতা যেন অটুট থাকে।
আনসারুল হক ইমরান
সম্পাদক, নূর নিউজ ২৪