লেখক ফোরাম পদক পেলেন তিন গুণী লেখক

বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের উদ্যোগে ‘লেখক ফোরাম পদক ২০২৫’ পেয়েছেন দেশের বরেণ্য তিন গুণী লেখক। তাদের মধ্যে তরুণ লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতায় অবদান রাখায় পদক পেয়েছেন মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাহিত্য রচনায় অবদানের জন্য পদক পেয়েছেন মুফতি হিফজুর রহমান, আর মৌলিক সাহিত্য রচনায় অবদানের জন্য পদক পেয়েছেন মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচার কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচা মিলনায়তনে লেখক ফোরামের যুগপূর্তি ও লেখক সম্মিলনে এ পদক প্রদান করা হয়।

লেখক ফোরাম আয়োজিত জাতীয় সাহিত্য প্রতিযোগিতা-২০২৫ এর বিজয়ীদের হাতেও এদিন পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। প্রবন্ধ ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন নেত্রকোনার আল মামুন তালুকদার, দ্বিতীয় হয়েছেন ঢাকার কাজী একরাম, তৃতীয় হয়েছেন কুমিল্লার কাজী বেলাল রাজী। গল্পে সেরা হয়েছেন তিনজন—ঢাকার তামীম আল আদনান প্রথম, গাজীপুরের আহমদা যুবায়ের খান দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন ঢাকার রহমতুল্লাহ শিহাব। ছড়ায় বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মৌলভীবাজারের মেরাজুল ইসলাম শওকত, দ্বিতীয় হয়েছেন ঢাকার মুজাহিদ আল কারিম ও তৃতীয় হয়েছেন ঢাকার মুস্তাকিম বিল্লাহ। এছাড়া এসব ক্যাটাগরিতে আরও পাঁচজন করে ১৫ জনকে শুভেচ্ছা পুরস্কার দেওয়া হয়।
যুগপূর্তি উৎসবে দেয়ালিকা ও ম্যাগাজিন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ৩টি দেয়ালিকা ও ৩টি ম্যাগাজিনকেও সেরা ঘোষণা করে পুরস্কৃত করা হয়।

এর আগে দুপুর ২টা থেকে কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাদের সরব উপস্থিতি মুখর হয়ে ওঠে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। কেউ দেখছেন থরে থরে সাজানো মাদরাসাছাত্রদের আঁকা দেয়ালিকা, কেউ হাতে নিচ্ছেন ম্যাগাজিন। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয় জুলাই বিপ্লবের কবিতা পাঠ, অনুভূতি প্রকাশ ও বক্তৃতা। একে একে মঞ্চে উঠেন লেখক ও অতিথিরা। শ্রোতারা মুগ্ধ হতে থাকেন তাদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনায়। একফাঁকে দেওয়া হয় সবার হাতে লেখক ফোরামের যুগপূর্তির সমৃদ্ধ স্মারক। রাত ৯টায় অনুষ্ঠান শেষ হয়।

লেখক ফোরামের সভাপতি কবি মুনীরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আমিন ইকবাল ও সহ-সভাপতি জিয়াউল আশরাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী মাওলানা আতাউর রহমান, লেখক শরীফ মুহাম্মদ, লেখক ও অনুবাদক জুবাইর আহমদ আশরাফ, মাসিক আদর্শ নারীর সম্পাদক মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী, যমযম নুর গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফেজ নুর মোহাম্মদ, লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও বার্তা টোয়েন্টিফোরের সহকারী সম্পাদক মুফতি এনায়েতুল্লাহ, লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকামেইলের বার্তা সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর, আওয়ার ইসলাম সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব, সময়ের আলোর মাল্টিমিডিয়া হেড সাঈদ রহমান, শীলন বাংলাদেশের সভাপতি মাসউদুল কাদির, দীনিয়াত বাংলাদেশের পরিচালক মুফতি সালমান, লেখক একটিভিস্ট রুহুল আমিন সাদী, মনযুরুল হক প্রমুখ।

পদকপ্রাপ্ত তিন লেখক, মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান—বাড়ি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নলতা গ্রামে, জন্ম ১৯৫০ সালে। বাবা বাহাদুর গাজী ও মা ভাগ্য বিবি। তার মাদরাসাজীবনের সূচনা গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গায়। রাজধানী মিরপুর ১২ নম্বরে অবস্থিত মাদরাসা দারুর রাশাদের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তিনি। লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। লিখেছেন নানা বিষয়ের বই। তার বইয়ের সংখ্যা ত্রিশের অধিক।
মুফতি হিফজুর রহমান—কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তর হাওলা গ্রামে তার জন্ম ১৯৫৮ সালে। পিতা মাওলানা মুহিব্বুর রহমান (রহ.) ও মা রাজিয়া খাতুন। দাওরায়ে হাদিস পড়েছেন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায়। দারুল উলুম বরুড়া মাদরাসায় কর্মজীবন শুরু। বর্তমানে জামিয়া রাহমানিয়াসহ একাধিক মাদরাসায় বুখারি শরিফ পড়াচ্ছেন। তিনি আরবি ও বাংলা ভাষায় বেশ কিছু বই লিখেছেন। মিসর থেকে তার দুটি বই ছাপা হয়েছে।
মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন—মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার চাষিরচরে তার বাড়ি, জন্ম ১৯৬৭ সালে। পড়াশোনার হাতেখড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দাওরায়ে হাদিস ও আরবি সাহিত্য পড়েছেন দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায়। ঢাকার চৌধুরীপাড়ায় মাদরাসায় কর্মজীবন শুরু তার। বর্তমানে রামপুরার জামিয়া কাসেম নানুতুবীতে বুখারি পড়াচ্ছেন তিনি। তার বেশ কিছু সৃজনশীল মৌলিক বই ও অনুবাদের বই রয়েছে। লেখালেখিতে অনন্য অবদানের জন্য তিনি মাসিক নকীব পদকসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম ইসলামি ধারার তরুণ লেখকদের জাতীয় সংগঠন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কর্মরত এবং সারাদেশে ছড়ানো লেখকদের নিয়ে ২০১৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ইতোমধ্যে সারাদেশের প্রায় পাঁচশত লেখক এই সংগঠনের সদস্য হয়েছেন। বিভিন্ন কার্যক্রম দ্বারা লেখক ফোরাম ইতোমধ্যে সর্বশ্রেণির লেখকদের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আফগানিস্তানে বিদেশগামীদের বিমানে উঠিয়ে চাঁদা নিচ্ছে মার্কিন সেনাসদস্যরা

নূর নিউজ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাদিয়ানী বিরোধী মহাসমাবেশে হেফাজত আমিরের সংহতি

আনসারুল হক

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাইতুল মোকাররমে পর্দা উঠলো ইসলামী বইমেলার

নূর নিউজ