ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে প্রথম দফার ২৫ শতাংশ শুল্ক ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ২৫ শতাংশ কার্যকর হবে আগামী ২৮ আগস্ট থেকে, যা রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ‘শাস্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প প্রশাসন।
এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, শুল্ক সংক্রান্ত বিরোধ না মিটলে ভারতের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “না, এটা সমাধান হওয়ার আগে কিছুই হবে না।” হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এএনআই প্রতিনিধির প্রশ্নে তিনি এই মন্তব্য করেন।
নিরাপত্তা-নীতি ও রাশিয়া-তেল প্রসঙ্গ
৭ আগস্ট এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতির স্বার্থে ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অস্বাভাবিক ও মারাত্মক হুমকি’ তৈরি করছে।
ফলে এখন থেকে ভারতের সব পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। যদিও কিছু নির্দিষ্ট পণ্য ও ইতোমধ্যে রপ্তানির পথে থাকা পণ্য সাময়িকভাবে এ থেকে অব্যাহতি পাবে।
মোদির কড়া বার্তা
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, অর্থনৈতিক চাপের মুখেও ভারত নীতিগত অবস্থান থেকে একচুলও সরবে না।
দিল্লিতে এমএস স্বামীনাথন শতবর্ষ সম্মেলনে মোদি বলেন, “আমাদের কাছে কৃষকের স্বার্থই সবার আগে। ভারত কখনও কৃষক, জেলে ও দুগ্ধ খাতের স্বার্থে আপস করবে না। আমি জানি, এর জন্য আমাদের চড়া মূল্য দিতে হবে এবং আমি প্রস্তুত। ভারতও প্রস্তুত।”
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, কৃষি ও দুগ্ধ খাতের মতো সংবেদনশীল খাত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য উন্মুক্ত হলে দেশের কোটি কোটি গ্রামীণ মানুষের জীবিকায় প্রভাব পড়বে। এই অবস্থান থেকে সরে আসতে নারাজ নয়াদিল্লি।
উত্তেজনা আরও বাড়ছে
বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্কারোপ ও আলোচনার অনীহা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে। উভয় পক্ষই নিজেদের ‘জাতীয় স্বার্থ’ অক্ষুণ্ন রাখতে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ভবিষ্যতে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে কিংবা ভারতের পাল্টা পদক্ষেপের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট শুল্ক নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও স্নায়ুচাপের মধ্যে যাচ্ছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।