গতকাল উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসায় ফ্যাসিবাদের দোসর সুন্নী নামধারীদের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান। বিবৃতিতে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চিহ্নিত উসকানিদাতা ও হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী ও চারিয়া মাদরাসায় গত রাতে ফ্যাসিবাদের দোসর সুন্নী নামধারীদের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ মাদরাসায় হামলা মানে দেশের সব কওমি মাদরাসায় হামলার শামিল, যা বরদাশত করা হবে না। এছাড়া আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-আন্দোলনের পথিকৃৎ ও অন্যতম জুলাই শক্তি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর প্রধান দপ্তরও এই মাদরাসায়। ফলে এই ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ কওমি মাদরাসাটি আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ইন্ডিয়ান আধিপত্যবাদের হামলার নিশানায় পরিণত হয়েছে। গতকাল কথিত জশনে জুলুসকে উপলক্ষ করে ফ্যাসিস্ট লীগের মদদে এবং পুলিশের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিষ্ক্রিয় ভূমিকার সুযোগে হাটহাজারী মাদরাসায় গভীর রাত পর্যন্ত সন্ত্রাসী হামলা চালায় একদল নামধারী সুন্নীরা।
তারা আরো বলেন, আওয়ামী দোসর সুন্নী সন্ত্রাসীদের হামলায় হাটহাজারী মাদরাসার প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন এবং অনেককে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কারা ভিকটিম তা বোঝার অপেক্ষা রাখে না। তাছাড়া, একটি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট মসজিদের উদ্দেশে সুন্নী সন্ত্রাসীদের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও গালিগালাজ এবং মাদরাসার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কটু মন্তব্য ও পাথর ছুঁড়ে উসকানিমূলক আচরণ কোনোভাবেই রাসূল (সা.)-এর শিক্ষা হতে পারে না। আমরা এসবেরও তীব্র নিন্দা জানাই।
তারা বলেন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণ না করলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারত। আমাদের ছাত্ররা একতরফা আহত হলেও আমরা আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে বাড়তি রক্তপাত ও সংঘাত এড়াতে ধৈর্য ও স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অবিলম্বে চিহ্নিত উসকানিদাতা ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম যখন রাসূল (সা.)-এর নামে কটূক্তিকারী ব্লগারদের বিচার দাবিতে গণ-আন্দোলন শুরু করেছিল, তখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর এই জিঘাংসু ‘সুন্নী’রা হেফাজতের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে ঘৃণা উগরে দিয়েছিল। এরা নিজেদের বড় ‘নবীপ্রেমিক’ দাবি করেন, অথচ যখন আমরা রাসূল (সা.)-এর সম্মান রক্ষায় শাহাদাতের রক্তে রাজপথ রঙিন করছিলাম, তখন তারা বসে বসে আমাদের রক্ত দেখে হেসেছিল। আল্লাহ তাদের দ্বীনের সঠিক বোধ ও হেদায়েত দান করুন, আমীন।