নির্বাচনের পূর্বেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যাসহ প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আজ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ইসলামবিদ্বেষ, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা রক্ষায় এবং রাষ্ট্র সংস্কারের গণআকাঙ্ক্ষা সুদৃঢ় করতে অবিলম্বে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করতে হবে। একইসঙ্গে, নির্বাচনের আগে শাপলা চত্বরে আলেম-ওলামাদের হত্যাকাণ্ড ও জুলাইয়ের গণহত্যাসহ শেখ হাসিনার শাসনামলের সব হত্যাযজ্ঞের বিচার শেষ করতে হবে। অন্যথায়, এই জাতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আজও শাপলা ও জুলাইয়ের ঘটনায় আহত হাজারো মানুষ পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করে বিছানায় কাতরাচ্ছে। যদি এই বিপ্লব ব্যর্থ হয়, তাহলে ছাত্র-জনতার সামনে বর্তমান সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।”
মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, “শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত পথ ধরেই জুলাই বিপ্লব এসেছে। এই বিপ্লব চলমান এবং এর চেতনা বিস্মৃত হলে তা হবে জাতীয় আত্মঘাত। যে কোনো অপশক্তি—হোক তা ভারতীয় আধিপত্যবাদ, মাফিয়াতন্ত্র বা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী শাসকগোষ্ঠী—জুলাইয়ের গণপ্রতিরোধে বারবার মুখোমুখি হবে। দেশের জনগণ আবারও মৌলিক অধিকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজপথে নামতে পিছপা হবে না।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়—না ফেরাউনের, না হাসিনার। ভবিষ্যতের শাসকদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা।”
বিবৃতিতে ইসলামাবাদী বলেন, “জুলাই বিপ্লব শুধু রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, এটি কাঠামোগত সংস্কারের আহ্বানও। বর্তমান রাষ্ট্র-ব্যবস্থা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের জন্ম দিয়েছে। এই কাঠামোর বিলোপ এবং নবনির্মাণের মাধ্যমেই কেবল বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ সম্ভব।”
তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্র সংস্কারের এই উদ্যোগকে জোরদার করতে হবে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামবিরোধী অপশক্তির কূটচাল থেকে দূরে থাকতে হবে। সংবিধান থেকে বহুত্ববাদের মতবাদ বাদ দিতে হবে, এবং কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে।”
বিবৃতির শেষাংশে ইসলামাবাদী জোর দেন, “সংস্কার হতে হবে দেশের জনগণের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে—বিদেশি ধারণা বা চাপ নয়, বরং বাংলাদেশের নিজস্ব ঐতিহ্যই হবে এই রাষ্ট্ররূপান্তরের ভিত্তি।”