কাতার প্রতিনিধি:
প্রবাসী বাংলাদেশিদের গর্বের আরেক নতুন অধ্যায় রচিত হলো কাতারে। প্রথমবারের মতো দোহা শহরের প্রাণকেন্দ্র সুক ওয়াকিফে অনুষ্ঠিত হয়েছে “বাংলাদেশি ম্যাংগো ফেস্টিভ্যাল/ আল হাম্বা এক্সিবিশন ২০২৫”, যেখানে বাংলাদেশের বিখ্যাত সব জাতের আম নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এক অনন্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় উৎসব।
বুধবার (২৫ জুন) ২০২৫ বিকেলে এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কাতারের প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস (PEO)-এর প্রতিনিধি আবদুর রহমান মোহাম্মদ আল নামা এবং কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং কাতারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।
এক সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে এবং সরকারি ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
উৎসবে প্রদর্শিত বাংলাদেশের বিখ্যাত আম জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে: হিমসাগর, আম্রপালি, ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হরিভাঙা, লক্ষণভোগ, কটিমন সহ আরও বেশ কিছু সুস্বাদু প্রজাতি। এছাড়াও প্রদর্শনীতে রয়েছে বাংলাদেশের নানা মৌসুমি ফল যেমন লিচু, কাঁঠাল, জাম, পেয়ারা, ড্রাগন ফল, বককৌরিয়া ও আনারস।
রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম বলেন, “এই প্রদর্শনী কেবল আম বিক্রির আয়োজন নয়, বরং এটি আমাদের দেশের কৃষি সম্পদ ও সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার একটি চমৎকার উদ্যোগ। বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে প্রবেশের জন্য এই ধরনের উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
আয়োজক পক্ষের অন্যতম প্রতিনিধি খালেদ সাইফ আল সুওয়াইদি জানান, “বাংলাদেশের ফলের প্রতি কাতারিদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। আমরা চেয়েছি তাদের সরাসরি এই ফলগুলোর স্বাদ নিতে দেওয়ার সুযোগ দিতে। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা মানসম্মত ও নিরাপদ কৃষিপণ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চাই।”
প্রদর্শনী স্থলে ব্যবহৃত হয়েছে বিশেষ ফ্রিজিং ব্যবস্থাসহ আধুনিক স্টল ডিজাইন, যাতে আমের স্বাদ ও মান অক্ষুণ্ন থাকে এবং দর্শনার্থীদের কেনাকাটা হয় স্বাচ্ছন্দ্যময়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, আমগুলো বিশেষ শীতল বিমানের মাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশ থেকে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্য শাখা, আমদানি-রপ্তানি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় কাতারি উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে আয়োজিত এ উৎসব শুধু ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেই নয়, বরং দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশি কৃষি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিতি আরও একধাপ এগিয়ে গেলো। ভবিষ্যতে এমন আরও আয়োজন কাতারে হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা।