এইচ এম হাছনাইন, ভোলা প্রতিনিধি:
ভোলা জেলার ভেদুরিয়া ঘাটে চাঁদা উত্তোলনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর অঙ্গসংগঠন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের এক সদস্যকে মিথ্যা মামলায় আটক করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই সদস্যের মুক্তি এবং জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই ২০২৫) সকাল ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ, ভোলা জেলা উত্তর শাখার নেতারা জানান, গত ৮ জুলাই (মঙ্গলবার দিবাগত রাত) কোনো অভিযোগ ছাড়াই সংগঠনের সদস্য ও সিএনজি চালক সিরাজুল ইসলাম-কে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে বর্বরভাবে আটক করা হয়।
তারা বলছেন, সিরাজুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ভেদুরিয়া ঘাট এলাকায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছিলেন। এর জের ধরেই তাকে পূর্বে মারধরের শিকার হতে হয় এবং শেষপর্যন্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আটক করা হয়।
তারা আরও অভিযোগ করেন, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়ির দরজা ভেঙে তাকে তুলে নিয়ে যায় ভেলুমিয়া ফাঁড়ির এসআই কিবরিয়া, পরে তাকে ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা স্পষ্টভাবে জানান, সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা অভিযোগ ছিল না। একদিন পর বলা হয় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, কিন্তু পুলিশ এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
সংগঠনটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজুল ইসলামকে সসম্মানে মুক্তি না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়। একইসঙ্গে, ঘটনাটির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ভোলা সদর থানার ওসি আবু শাহাদাত মোহাম্মদ হাসনাইন পারভেজ এবং এসআই কিবরিয়ার অবিলম্বে অপসারণ দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ভোলা জেলা উত্তর শাখার সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, এবং ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী সহ শতাধিক নেতাকর্মী ও স্থানীয় সিএনজি চালকরা।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ওসি আবু শাহাদাত মোহাম্মদ হাসনাইন পারভেজ বলেন, “সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে পূর্বে একটি চাঁদাবাজি ও মারধরের মামলা রয়েছে। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা দাবি করছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রশাসনের অপব্যবহারের মাধ্যমে একজন নিরীহ কর্মীকে হয়রানি করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হচ্ছে কি না — সেটি স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টিতে এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।