আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫–এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন সংশোধনীতে ইভিএম বাতিল, ‘না ভোট’ পুনর্বহাল, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয় ও সম্পত্তি প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা এবং নির্বাচনী জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা নির্ধারণসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, “আরপিও সংশোধনের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল করা। একইসঙ্গে পুনর্বহাল করা হয়েছে ‘না ভোট’ ব্যবস্থা, যাতে কোনো নির্বাচনী আসনে একমাত্র প্রার্থী থাকলেও ভোটাররা তাকে প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ পান। ভোটাররা যদি ‘না ভোট’ দেন, সেই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
নতুন সংশোধনী অনুযায়ী—
- প্রার্থীদের দেশি ও বিদেশি আয় ও সম্পত্তির বিবরণ হলফনামার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
- পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- রাজনৈতিক দলকে ৫০০ টাকার বেশি অনুদান বা চাঁদা গ্রহণে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং অনুদানদাতাকে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।
- বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ভোটার ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা ডাক ভোটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।
- ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।
- কোনো নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম হলে পুরো ভোট বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।
- আইন উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, “প্রত্যেক প্রার্থীর আর্থিক অবস্থা ও সম্পদের তথ্য জনগণের জানার সুযোগ থাকতে হবে।”
সভায় আরও কয়েকটি আইন অনুমোদন পায়, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন।
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।