নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক বাছাইপর্বে দুই ভিন্ন রাজনৈতিক দর্শনের প্রার্থীর মধ্যে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস মিলছে। একজন তরুণ, বামপন্থী অভিবাসী রাজনীতিক জোহরান মামদানি, অন্যজন অভিজ্ঞ মধ্যপন্থী এবং নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো।
নিউইয়র্ক সিটি, যেটি ঐতিহাসিকভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত, সেখানে ২৪ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক নির্বাচন। এই নির্বাচনে জোহরান মামদানি জয়ী হলে, তিনি নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার সম্ভাবনায় ইতিহাস গড়বেন।
জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আইনসভার সদস্য এবং প্রগতিশীল রাজনীতির সক্রিয় কণ্ঠস্বর। তাঁর বিপরীতে দাঁড়ানো অ্যান্ড্রু কুমো নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর, যিনি মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত এবং ডেমোক্র্যাটদের মূল ধারার প্রতিনিধিত্ব করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রাথমিক নির্বাচন শুধু নিউইয়র্কের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে না, বরং জাতীয় রাজনীতিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির বাম এবং কেন্দ্রপন্থীদের শক্তি ও প্রভাবের তুলনাও স্পষ্ট করবে। বিশেষ করে ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচন ও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে এই নির্বাচনের ফল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
নিউইয়র্কের মেয়র পদটি শুধু একটি শহরের দায়িত্বই নয়, এটি জাতীয় পরিচিতির একটি বড় মঞ্চ। গত তিনজন মেয়রের সবাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক বাছাইপর্বে অংশ নিয়েছেন, যার ফলে এবারের নির্বাচনও জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব পাচ্ছে।
নবনির্বাচিত মেয়রকে নগরের বহু জটিল সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে— যার মধ্যে রয়েছে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, আবাসন সংকট, যানজট, গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নাগরিক সুবিধার টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলা। শুধু নিউইয়র্কবাসী নয়, প্রতি বছর শহরটিতে আগত প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ পর্যটকের ওপরও মেয়রের নেতৃত্বের প্রভাব পড়ে।
সব মিলিয়ে, নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের এই প্রাথমিক লড়াইটি একটি ঐতিহাসিক এবং প্রভাবশালী মুহূর্তে পরিণত হয়েছে— যেখানে মুসলিম অভিবাসী জোহরান মামদানি এগিয়ে গেলে বদলে যেতে পারে ইতিহাসের ধারা।