বরিশাল সিটির মেয়র হতে চায় চরমোনাই পীর

আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল করীমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই মাদ্রাসা অডিটোরিয়ামে দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম সংবাদ সম্মেলন করে মেয়র প্রার্থী হিসেবে হাতপাখা প্রতীকে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা দেন।

এ সময় দলের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম নগরবাসীকে উদ্দেশ করে বলেন, বরিশাল সিটি আমাদের জন্মস্থান। স্বাধীনতার ৫২ বছর চলছে, কিন্তু এই সিটিতে যারাই দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মাধ্যমে আপনার কী পেয়েছেন। আপনাদের দিলের যে চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা কতটুকু তাদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়েছে, তা আপনাদের কাছেই পরিষ্কার, এটা নতুন করে উত্থাপন করার কিছু নেই। বিগত সিটি নির্বাচনে যে নির্বাচিত হয়েছেন, তিনি কিভাবে হয়েছেন তা আমাদের সবার জানা আছে। নির্বাচিত হওয়ার পরে সে কিভাবে দায়িত্ব পালন করেছে কিংবা তার আগে-পরে কিভাবে কে দায়িত্ব পালন করেছে তাও আমাদের সবার জানা আছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষ যেন স্বাধীনভাবে নিজেদের জীবনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে এবং সম্মানসহ বসবাস করতে পারে এটার প্রয়োজন অনুভব করেই বরিশাল সিটি নির্বাচনে আমরা প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো প্রার্থী মেয়র হলে মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার, সম্মান, স্বাধীনতা পাবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে- এ চিন্তার পরেই আমরা এমন প্রার্থী দেওয়ার চিন্তা করেছি।

এ সময় মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করীম আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোট গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি ভোট জালিয়াতির চেষ্টা হলে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ না করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি তোলেন।

এ সময় তিনি বলেন, আমি বরিশালের মেয়র হতে চাই না, খাদেম হতে চাই। আমি বরিশালবাসীর জন্য কি করব জানি না, কিন্তু তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করব। বরিশাল সিটি করপোরেশনে কি উপহার দিব তা জানি না, কিন্তু মানুষের শান্তি প্রতিষ্ঠা তার অধিকার বাস্তবায়নের জন্য আমার জান ও মাল কুরবান করার চেষ্টা করব। আমি চেষ্টা করব সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব কোনো মানুষ যেন আমার দ্বারা অপমানিত না হয়, প্রতিটি মানুষ যেন সুখী হতে পারে, সম্মানিত হয়। তাদের সুখে-দুখে যেন পাশে থাকতে পারি।

তিনি বলেন, সরকারকে ম্যাসেজ দিতে চাই, অন্য কোনোভাবে যদি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করেন, তাহলে ক্ষমতার মসনদকে কাঁপানোর জন্য এটাই হবে সূচনা। এ সময় তিনি সব শ্রেণির ভোটারদের কাছে নির্বাচনে ভোট প্রত্যাশাও করেন। পরে মেয়র পদে প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর এক দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

তিন দিনে ৪৪ ট্রাক ত্রাণ পাঠিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

নূর নিউজ

প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাচ্ছে জামায়াত : ইসি

আনসারুল হক

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা একটা মাফিয়ার দেশে পরিণত হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচত নয় এই সরকার আজকে জোর করে ক্ষমতা দখল করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা যখন চুরি-চামারির কথা বলি, গায়ে লাগে তাদের। গায়ে লাগার কিছু নাই, চুরি করলে মাথা নিচু করে থাকতে হবে। সময় আসছে, যখন তাদের মাথা নিচু করে এ দেশ থেকে চলে যেতে হবে। আজ শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল বলেন, প্রত্যেকটি চোরের-ডাকাতের বিচার হবে এ দেশে। তারা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, এরা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এরা কোনো নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারেনি। শুধুমাত্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিভিন্ন আধিপত্যবাদী, পরাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। আমাদের সমস্ত স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষা আছে তা ধ্বংস করে দিচ্ছে। ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লাখের বেশি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারা একই কায়দায় এ দেশ শাসন করতে চায়, বিরোধী সব মতকে দমন করতে চায়, গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করতে চায়। আবারও তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্ত ঝরিয়েছে। আমাদের ছাত্রদলের নেতাদের নির্মমভাবে পিটিয়ে-গুলি করে আহত করেছে। খুলনায় গত পরশু তারা মিটিংয়ে আক্রমণ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা সন্ত্রাস করে, ভয় দেখিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আবারও মানুষের অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম তা ধ্বংস করে দিতে চায়। এবার জেগে উঠছে মানুষ। আমাদের নেতা তারেক রহমান যে পতাকা উত্তোলন করেছেন তা এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকা। যে পতাকা শহীদ জিয়াউর রহমান তুলে ধরেছিলেন, মানুষের সামনে নিয়ে এসেছিলেন; বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা কোথাও চাকরি পাই না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা পাস করে যায় কিন্তু তাদের চাকরি দেওয়া হয় না। অথচ ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিল, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে; ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে; বিনা পয়সায় সার দেবে। যেখানে যাবে শুধু পয়সা। পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেতে হলে ২০ লাখ টাকা কমপক্ষে লাগে, তাও পাবেন না যদি আওয়ামী লীগ না হন। এ দেশকে তারা লুটপাটের রাজত্ব বানিয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে সত্যিকার অর্থে জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত করার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এই দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সরকার যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, সেই কমিশনের পরিচালনায় সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হবে।

নূর নিউজ