মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেলেন কওমি মাদরাসা পড়ুয়া ৩ আলেম

সৌদি আরবের বিশ্ববিখ্যাত মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের তিনজন কওমি মাদরাসা পড়ুয়া আলেম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তাঁরা খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানি। তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে আরও দুই বাংলাদেশি আলেম—মাওলানা এরশাদুর রহমান ও মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান—শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

মাওলানা শরীফ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাপূর্ণ হাদিস বিভাগে, মাওলানা এরশাদুর রহমান আরবি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে, আর মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান শরিয়াহ বিভাগে শিক্ষকতা করবেন।

মাওলানা শরীফ আহমাদ আল মাদানি

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামের সন্তান শরীফ আল মাদানি। ২০১২ সালে স্কলারশিপ নিয়ে মদিনায় যান। এরপর আরবি ভাষা শিক্ষা, হাদিস বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স ও এমফিল সম্পন্ন করে বর্তমানে পিএইচডি গবেষণা করছেন। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মসজিদে নববী একাডেমিতে শিক্ষক, পরীক্ষক ও শিক্ষক প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসা থেকে দাওরা হাদিস ও ইফতা শেষ করেন।

মাওলানা এরশাদুর রহমান

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পশ্চিম পানখালী গ্রামের বাসিন্দা এরশাদুর রহমান। প্রাথমিক পড়াশোনা করেন জামিয়া দারুস সুন্নাহতে, পরে চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়ায় গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আরবি ভাষা বিভাগ থেকে অনার্স ও এমফিল সম্পন্ন করেন এবং বর্তমানে পিএইচডি করছেন। তাঁর এমফিল গবেষণার বিষয় ছিল ‘বাংলা ভাষায় আরবি ভাষার প্রভাব: একটি তুলনামূলক অধ্যয়ন’—যা মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো বাংলা ভাষা নিয়ে একাডেমিক গবেষণা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

মাওলানা মোশাহিদ দেওয়ান

নারায়ণগঞ্জের সন্তান মোশাহিদ দেওয়ান ২০১৬ সালে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্কলারশিপ নিয়ে মদিনায় যান। তিনি Faculty of Arabic Language থেকে অনার্স এবং ভাষাতত্ত্ব বিভাগ (কিসমুল লুগায়িয়্যাত) থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। বর্তমানে এমফিল গবেষণার শেষ পর্যায়ে আছেন। এর আগে ঢাকার দারুল উলূম মাদানীনগর মাদরাসা থেকে তাকমিল (দাওরাতুল হাদিস) সম্পন্ন করে সারাদেশে মেধা তালিকায় দশম স্থান অধিকার করেন। পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল সম্পন্ন করেন।

মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে তিনজন কওমি আলেমের শিক্ষকতা করার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবজনক অর্জন। তাঁদের এ কৃতিত্ব দেশের তরুণ প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও গবেষণায় অনুপ্রাণিত করবে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

দাড়ি রাখার কারণে ৩ পুলিশ সদস্যকে শাস্তি প্রদান ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নেওয়ার শামিল: জমিয়ত

আনসারুল হক

বাকপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সম্মানে ঢাকায় আল নূর কালচারাল সেন্টারের ইফতার মাহফিল

আনসারুল হক

নিরপেক্ষ নির্বাচনে সরকারকে সহযোগিতায় প্রস্তুত সেনাবাহিনী: সেনাপ্রধান

আনসারুল হক