সৌদি আরবের চতুর্থ গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট আলেম ড. সালেহ বিন ফাওজান বিন আবদুল্লাহ আল-ফাওজান (৯০)। তিনি একইসঙ্গে সিনিয়র স্কলার্স কাউন্সিল এবং ইসলামিক রিসার্চ অ্যান্ড ইফতা বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করবেন। এই নিয়োগের মাধ্যমে তিনি মন্ত্রীর পদমর্যাদা লাভ করেছেন।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের পরামর্শে এই নিয়োগ অনুমোদন দেন।
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ৮২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শেখ, যিনি টানা ২৬ বছর এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন এবং টানা ৩৪ বছর হজের খুতবা প্রদান করেন।
শৈশব ও শিক্ষা জীবন
১৯৩৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন ড. সালেহ আল-ফাওজান। শৈশবে পিতৃহীন হয়ে তিনি স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে কুরআন শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি আলেম সমাজের বিভিন্ন শায়খের তত্ত্বাবধানে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করেন। বুরাইদাহ শহরে তিনি শায়খ আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ ও শায়খ ইবরাহিম বিন উবাইদের সান্নিধ্যে থাকেন।
১৯৬১ সালে রিয়াদের শরিয়াহ কলেজ থেকে তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করেন—গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইসলামে উত্তরাধিকার নীতি’। পরবর্তীতে একই বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেন ‘ইসলামী শরিয়ায় খাদ্য বিধান’ বিষয়ে গবেষণা করে।
কর্মজীবন
ড. আল-ফাওজান শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন রিয়াদের এক প্রতিষ্ঠানে। পরে তিনি রিয়াদ শরিয়াহ কলেজে অধ্যাপনা করেন এবং ধীরে ধীরে বিচার বিভাগীয় উচ্চতর প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান।
১৯৯২ সালে তিনি ইসলামিক রিসার্চ অ্যান্ড ইফতা-এর স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান এবং দীর্ঘদিন ধরে সেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পাশাপাশি তিনি রেডিওর জনপ্রিয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘নূর আলা আল-দারব’ এবং বিভিন্ন টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইসলামী জ্ঞান প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তার সুবিস্তৃত জ্ঞান, দৃঢ় অবস্থান ও ইসলামী শরিয়াহ বিষয়ে গভীর দখল তাঁকে সমকালীন মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী আলেমে পরিণত করেছে।