কুমিল্লার ঘটনার জের, ত্রিপুরায় মুসলিম অঞ্চলগুলোতে উত্তেজনা

বাংলাদেশের ঘটনার জেরে ভারতের উত্তাল ত্রিপুরা। রটছে গুজব। মসজিদে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লার ঘটনার প্রভাব পড়েছে ত্রিপুরায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং হিন্দু জাগরণ মঞ্চের মিছিল ঘিরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের একাধিক জায়গায় হামলার গুজব রটেছে। কোনো কোনো মুসলিম অঞ্চলে যথেষ্ট উত্তেজনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে মুসলিম সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদনপত্র জমা দিয়েছে জামিয়াতে উলেমা হিন্দ।

ত্রিপুরার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে জানানো হয়েছে, ১৫০ মসজিদে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিস্থিতি আগের চেয়ে শান্ত হয়েছে বলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের ঘটনার জেরে গত ২১ অক্টোবর ত্রিপুরার গোমতি জেলার উদয়পুরে এক বিশাল মিছিলের আয়োজন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে প্রথম উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগোনোর চেষ্টা করলে প্রশাসনের সাথে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় আন্দোলনকারীদের। পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে। ঘটনায় দুইপক্ষেরই কয়েকজন আহত হয়।

পুলিশের বক্তব্য, ওই এলাকায় মুসলিমদের বসবাস থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে মিছিল আটকানো হয়েছিল। যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে।

কিন্তু আরএসএস নেতা অভিজিৎ চক্রবর্তীর বক্তব্য, আগেই পুলিশের কাছ থেকে মিছিলের অনুমতি নিয়ে রাখা হয়েছিল। এদিকে এই ঘটনার সাথে সাথেই দিকে দিকে গুজব ছড়াতে শুরু করে। উনকোটিতে এক দেবতার মূর্তি পাহাড়ের উপর ফেলে রেখে আসা হয়েছে বলে গুজব ছড়ায়। উনকোটির পুলিশ সুপার রতি রঞ্জন দেবনাথ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যেভাবে গত কিছুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে পাহাড়ের উপর ওই জায়গায় কারো পক্ষে মূর্তি রেখে আসা সম্ভব নয়। বিষয়টি গুজব বলেই তিনি দাবি করেছেন।

ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার কাছেও দুই-একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। একটি মসজিদে সামান্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে ডয়চে ভেলেকে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে অপরাধীদের ধরা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। ধর্মনগরেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বিপ্লব দেবের কাছে আবেদনপত্র দেন জামিয়াত উলেমা হিন্দের ত্রিপুরা শাখার প্রধান মুফতি তৈবুর রহমান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনার নিন্দা করি। কিন্তু ত্রিপুরাতে যা ঘটছে, তাও মেনে নেয়া যায় না। মুসলমানদের উপর আক্রমণের চেষ্টা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।’

বরাক বুলেটিনের সাংবাদিক অনির্বাণ রায়চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘গত তিনদিন ত্রিপুরায় যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল। তবে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ নেয়ায়, এখন পরিস্থিতি কিছুটা সামান্য।’

অনির্বাণের বক্তব্য, আসাম এবং ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের আমলে এধরনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বারবার। এতে শাসকদলের ইন্ধন আছে বলেই তিনি মনে করেন। ত্রিপুরার বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, এ ধরনের ঘটনাকে বিজেপি সমর্থন করে না। দলের সংখ্যালঘু সেলের কর্মীরা আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে পৌঁছে গেছে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ভিখারির মতো কাজ করার জন্য পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়নি

নূর নিউজ

ইমরান খানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী?

নূর নিউজ

পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আতাউল মুহাইমিন ইন্তিকাল করেছেন

আলাউদ্দিন