প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দান করার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম

ইসলামে দান-সদকার গুরুত্ব অনেক। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ দান করতে উৎসাহিত করা হয়েছে ইসলামে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আর তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তারা কী ব্যয় করবে। বল, ‘যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত’। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা কর। (সূরা বাকারা, আয়াত, ২১৯)

প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদের দান

এই আয়াতের মাধ্যমে বুঝা যায়, নফল দান-সদকা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থেকে করতে হয়। তবে পরিবার ও সন্তানদের কষ্ট দিয়ে দান করা উচিত নয়। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সা. বলেছেন, উত্তম সদকা হল যা দান করার পরেও মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরন-পোষণ তোমার জিম্মায় তাদের আগে দাও। (কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নয়তো তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে রেখে যাচ্ছ? (বুখারি, হাদিস, ৪৯৬৪)

দান-সদকা মানুষকে বিপদাপদ থেকে মুক্তি দেয়। তবে বিভিন্ন কারণে মানুষ দানের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়। এমন একটি বিষয় হলো- দান করে খোঁটা দেওয়া বা মানুষকে দেখানোর জন্য দান করা।

দানের পর খোঁটা

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দেয়ার মাধ্যমে তোমাদের সদকা বাতিল করো না। সে ব্যক্তির মত, যে তার সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং বিশ্বাস করে না আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি। অতএব তার উপমা এমন একটি মসৃণ পাথর, যার উপর রয়েছে মাটি। অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ল, ফলে তাকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলল। তারা যা অর্জন করেছে তার মাধ্যমে তারা কোন কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। আর আল্লাহ কাফির জাতিকে হিদায়াত দেন না। ( সূরা বাকারা, আয়াত, ২৬৪)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, যে দানের পর কষ্ট দেয়া হয় তার চেয়ে ভাল কথা ও ক্ষমা উত্তম; বস্তুতঃ আল্লাহ অভাবমুক্ত ও পরম সহিষ্ণু। (সূরা বাকারা, আয়াত, ২৬৩)

এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, দান-সদকা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তায়ালার জন্য করতে হবে। কাউকে দেখানো, খোঁটা দেওয়া বা কষ্ট দেওয়ার জন্য করা যাবে না। এমন হলে দানের সওয়াব পাওয়া যাবে না।

আল্লাহর জন্য দান-সদকা

দান-সদকা ও যেকোনো ইবাদত একনিষ্ঠ চিত্তে করা আবশ্যক। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদেরকে এ ছাড়া অন্য কোন হুকুমই দেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহর ‘ইবাদত করবে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে। (সূরা বাইয়্যিনা, (৯৮), আয়াত, ৫) অতএব যে কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হবে না, তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এবং এতে সওয়াব পাওয়া যাবে না।

নবীজি সা. দানের সওয়াব নষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে খোঁটাকে চিহ্নিত করে বলেছেন, খোটাদানকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

মূলত আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন অপরের হিতাকাঙ্খী করে। মানুষের মাঝে ধনী-গরিবের পার্থক্য সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য। আর ধনীদের সম্পদে গরিবের অধিকার রয়েছে। তাই ধনীদের উচিত শুধু ‍আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করা।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আর তারা আল্লাহর প্রতি তাদের ভালবাসার কারণে মিসকীন, ইয়াতীম ও কয়েদীকে খাবার খাওয়ায়। এবং বলে, শুধু আল্লাহর সস্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদেরকে খাবার দান করি, আমরা তোমাদের কাছ থেকে প্রতিদান চাই না, কৃতজ্ঞতাও নয়। (সূরা দাহর,(৭৬) আয়াত, ৮-৯)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

তাশাহহুদ শেষ করার আগে ইমাম দাঁড়িয়ে গেলে করণীয়

নূর নিউজ

হিল্লা বিয়ে নিয়ে আপত্তি ও জবাব

নূর নিউজ

হজ ও ওমরার মিকাতগুলো কী কী?

নূর নিউজ