ভারতকে খুশি করে কেউ ক্ষমতায় যেতে চাইলে প্রতিহত করবে জনতা: মুফতি ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই আজ ২১ জুন শনিবার কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ মাঠে এক বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহাসিকভাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য সংগ্রাম করে আসছে। কিন্তু বারংবার এই জাতী প্রতারিত হয়েছে। সেই পলাশী থেকে শুরু হয়ে ৪৭, ৫২, ৭১, ৯০ ও ২০২৪ এর জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে আমরা লড়াই করেছি। গুলির সামনে বুক পেতেছি। স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করেছি। আশা ছিলো, দেশে শান্তি আসবে, বৈষম্য দুর হবে। চাঁদাবাজী-সন্ত্রাস দুর হবে। কিন্তু আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হয় নাই। এখনো দেশে চাঁদাবাজী হয়, এখনো দখলদারী হয়, খুন-খারাবী হয়। ফলে আমাদের আন্দোলন শেষ হয় নাই। তাই এবারের আন্দোলন চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন।

মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশ থেকে লক্ষকোটি টাকা পাচার হয়েছে। বিশ ফ্যামিলির কাছে গোটা দেশের অর্থনীতির পরিমান সম্পদ জমা হয়ে আছে। দেশের প্রতিজন মানুষ একলক্ষ বিশ হাজার টাকার ঋণের বোঝা বহন করছে। এই অবস্থার পরিবর্তনে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে যেভাবে স্বৈরতন্ত্রকে উৎখাত করেছি সেভাবেই দেশের অর্থনীতির অবস্থা পরিবর্তন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

শায়েখে চরমোনাই বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ভারতের সাথে গোলামীর চুক্তি করেছিলো। আমাদেরকে গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমরা স্বাধীন। কেউ আমাদের গোলামীতে আটকে রাখতে পারবে না। এখনো কেউ কেউ ভারতকে খুশি করে ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশে ভারতের দালালদের আর কোন স্থান হবে না। ভারতের দালালী করে কেউ ক্ষমতায় যেতে চাইলে তাকে প্রতিহত করা হবে।

মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশের কোটি জনতা আমাদের সম্পদ। এই সম্পদ যে কোন মূল্যবান খনিজের চেয়েও মূল্যবান। কিন্তু আগের সরকারগুলো এই সম্পদকে কাজে লাগায় নাই। জনসংখ্যাকে সম্পদে রুপান্তর করার বদলে তারা তারুণ্যের হাতে মাদক তুলে দিয়েছে। হিংসা, বিদ্বেষ, খুন ও হানাহানির অভ্যাস গড়ে তুলেছে। ওরা আমাদের সম্পদকে নষ্ট করতে চায়।

শায়েখে চরমোনাই বলেন,আমরা ঐক্য চাই, উন্নয়ন চাই। শান্তি ও সমৃদ্ধি চাই। আমরা ক্ষমতায় গেলে সকল ধর্মের সকলে সমান অধিকার পাবে। নারী তার প্রাপ্ত মর্যাদা পাবে। মানুষ তার মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে। সেজন্য বলবো, সকল মার্কার দেখা শেষ, সকল আদর্শের দেখা শেষ। এখন হাত পাখা ও ইসলামের আদর্শেই বাংলাদেশ তার কাংখিত মুক্তি পেতে পারে।

শায়েখে চরমোনাই বলেন, ইসলাম আসলে কারো ভয় পাওয়ার কিছু নাই। ইসলাম সমাজ ও পরিবেশকে এভাবে বদলে দেবে যে, মানুষের ভেতর থেকেই অপরাধ প্রবনতা দুর হয়ে যাবে। মানুষের মধ্যে অপরাধের চিন্তাই জন্ম নেবে না। দরিদ্ররা ধনী হয়ে যাবে। কারণ বর্তমান অর্থনীতির বিপরিতে ইসলামের অর্থনীতি ধনীদের থেকে গরীবদের দিকে অর্থ প্রবাহিত করে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর বলেন, চোরের মাধ্যমে চুরি দমন করা যায় না। দুর্নীতিবাজদের মাধ্যমে দুর্নীতি দুর করা যাবে না। সেজন্য বলবো, হাতপাখাকে বিজয়ী করুন। ইনশাআল্লাহ মানুষের ভাগ্য খুলে যাবে। আমাদের আজন্ম লালিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ।

গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট হাসিবুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমেদ মানসুর।

সমাবেশে কুড়িগ্রাম চারটি আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম,শায়েখে চরমোনাই। প্রার্থীগণ হলেন, কুড়িগ্রাম-১ এ আলহাজ্ব হারিসুল বারী রনি। কুড়িগ্রাম-২ এ অধ্যক্ষ মাওলানা নুর বখত মিয়া। কুড়িগ্রাম-৩ এ অধ্যাপক ডাক্তার আক্কাস আলী সরকার এবং কুড়িগ্রাম-৪ এ মাওলানা হাফিজুর রহমান।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এখন থেকে হজ যাত্রীদের পাসপোর্ট হজ অফিসে জমা দিতে হবে না

নূর নিউজ

ইমরান খানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

আনসারুল হক

হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক গ্রেফতার

আনসারুল হক