রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল ২০২৩) তার জামিন বিষয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনমুন আক্তার।
অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম জানান, রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন। এর ফলে তার মুক্তিতে বাধা নেই।
এর আগে গত বছরের ১ মার্চ রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই রুলের চূড়ান্ত নিয়ে আজ সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। ভবনের নিচে চাপা পড়ে সারেন পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। ওই ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় দুই হাজার শ্রমিক আহত ও পঙ্গু হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন— রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা আব্দুল খালেক, রানার মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন) এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসাইন, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, সাভার পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপ-সহকারি প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাভার পৌরসভার সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আব্দুল মোত্তালিব, পৌরসভার সাবেক সচিব মর্জিনা খান, সাবেক সচিব মো. আবুল বাশার, ফ্যান্টম এপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের এমডি বজলুস সামাদ ও ইথার টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।