বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নেবে জাপান

বাংলাদেশ থেকে এক লাখ দক্ষ কর্মী নিয়োগের উদ্যোগে অগ্রগতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাপানের ব্যবসায়ী সংগঠন ‘ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস’ (এনবিসিসি)।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনবিসিসি’র ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

৬৫টিরও বেশি জাপানি কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত এই ফেডারেশনটি সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওআই) স্বাক্ষর করেছে। চুক্তির লক্ষ্য—বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন ও কর্মসংস্থানের জন্য একটি কাঠামো গড়ে তোলা, যার আওতায় আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (এসএসডব্লিউও) প্রোগ্রামের মাধ্যমে এক লাখেরও বেশি কর্মী জাপানে পাঠানো হবে।

প্রতিনিধিদল জানায়, প্রথম ধাপে আগামী বছর দুই হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। পরবর্তী ধাপে ২০২৭ সালে ছয় হাজার ও ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নির্মাণ, সেবা, এভিয়েশন, গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে এসব কর্মীর চাহিদা সবচেয়ে বেশি হবে বলে তারা জানান। এছাড়া ভবিষ্যতে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতেও দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন বাড়বে।

বাংলাদেশে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সম্ভাব্য কর্মীদের জন্য দুটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে কার্যক্রম চলছে। এনবিসিসি প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যে এসব কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা প্রশিক্ষণের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, “আমি মার্চ মাসে যখন কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করি, তখনকার তুলনায় এখন বিশাল উন্নতি হয়েছে। প্রশিক্ষণের মান নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আগামী বছরই দুই হাজার দক্ষ কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

তবে তিনি প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতা আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেন। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ভাষাগত দক্ষতা বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য ভার্চুয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে—জাপান থেকে শিক্ষকরা অনলাইনে পড়াবেন। প্রয়োজনে জাপানি প্রশিক্ষকদের বাংলাদেশে এনে সরাসরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নারীরা অত্যন্ত পরিশ্রমী ও যত্নশীল। কেয়ারগিভিং সেক্টরে তাদের অংশগ্রহণ জাপানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। “প্রাথমিকভাবে কিছুটা কঠিন মনে হলেও একবার শিখে নিলে তারা অন্যদেরও শেখাতে পারবে,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এনবিসিসি প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে চার লাখেরও বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে। তারা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নার্স নিয়োগের সম্ভাবনা বিবেচনা করছেন।

বৈঠকে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, সরকার জাপানে কর্মী প্রেরণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করছে। এ লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ এবং সমস্যার সমাধানে বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বাসস

এ জাতীয় আরো সংবাদ

সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শক্তিশালী নৌবাহিনীর বিকল্প নেই: প্রধানমন্ত্রী

নূর নিউজ

‘সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরামের ঐক্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’

নূর নিউজ

মুক্তির পরই হেফাজতের বড় পদ পাবেন মামুনুল হক

নূর নিউজ